• ঢাকা বুধবার, ১৮ ডিসেম্বর ২০২৪, ৩ পৌষ ১৪৩১

৪ আগস্ট ২০২৪: অসহযোগ আন্দোলনে উত্তাল সারাদেশ

নিজস্ব প্রতিবেদক    ৪ আগস্ট ২০২৫, ১০:০২ এ.এম.
৪ আগস্ট: ছবি সংগৃহীত

শেখ হাসিনা সরকারের পদত্যাগের একদিন আগে, ৪ আগস্ট ২০২৪-এ দেশজুড়ে নতুন মাত্রা নেয় চলমান গণআন্দোলন। আন্দোলনকারীদের ওপর গুলি না করার নির্দেশনা চেয়ে করা রিট খারিজ হওয়ায়, বিভিন্ন বাহিনী সশস্ত্রভাবে দমন-পীড়নের পথ বেছে নেয়। রাষ্ট্রীয় বাহিনীর আচরণে অনেকেই ২০১৩-১৪ সালের জঙ্গি দমনের অভিযানগুলোর স্মৃতি ফিরে পান।

এদিন থেকেই সারাদেশে শুরু হয় সর্বাত্মক অসহযোগ কর্মসূচি। ছাত্র-জনতা থেকে শুরু করে পেশাজীবী, সাধারণ মানুষ এক দফা দাবিতে ঐক্যবদ্ধ হন-প্রধানমন্ত্রীর পদত্যাগ। আন্দোলনের অংশ হিসেবে ঘোষণা করা হয় ‌‘মার্চ টু ঢাকা’ কর্মসূচি।

সকাল থেকেই রাজধানীর যাত্রাবাড়ী, রামপুরা, উত্তরা, বাড্ডা, শাহবাগ, সায়েন্স ল্যাব ও ধানমন্ডিসহ বিভিন্ন এলাকা পরিণত হয় কার্যত রণক্ষেত্রে। ইস্ট ওয়েস্ট, ব্র্যাক ইউনিভার্সিটিসহ বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের শিক্ষক-শিক্ষার্থী ও অভিভাবকরা বিক্ষোভে যোগ দিলে নিরাপত্তা বাহিনী ও সরকারি দলসমর্থিত গোষ্ঠীরা তাদের ওপর গুলিবর্ষণ করে। বহু জায়গায় চলতে থাকে পাল্টাপাল্টি ধাওয়া-পালানো ও সংঘর্ষ।

ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে কয়েক ঘণ্টার ব্যবধানে গুলিবিদ্ধ হয়ে ভর্তি হন অন্তত ৬৭ জন। সারাদেশে আহত হন কয়েক শত মানুষ। শুধু জরুরি বিভাগেই মৃত্যু হয় ৭ জনের।

এদিন আন্দোলনকারীদের ক্ষোভ ছড়িয়ে পড়ে বিভিন্ন সরকারি স্থাপনায়। আদালত চত্বরে হামলা ও বিএসএমএমইউ কম্পাউন্ডে অগ্নিসংযোগের ঘটনাও ঘটে। বিচ্ছিন্নভাবে সরকারি ভবনেও ভাঙচুরের খবর পাওয়া যায়।

সবচেয়ে চমকপ্রদ ঘটনা ঘটে মিরপুরে, যেখানে আন্দোলনকারীদের পাশে দাঁড়ান কিছু সেনাসদস্য। তারা সরকার-সমর্থিত বাহিনীর দিকে ফাঁকা গুলি ছোড়েন। এতে পরিস্থিতি নিয়ে জনমনে ভিন্ন বার্তা ছড়িয়ে পড়ে-উপরমহলে বিভাজন কি তৈরি হচ্ছে?

চট্টগ্রাম, নারায়ণগঞ্জ, সিলেট, দিনাজপুর ও ঝিনাইদহসহ সারাদেশে আন্দোলনকারীদের প্রতিরোধ গড়ে ওঠে। এই পরিস্থিতিতে, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা জরুরি বৈঠকে বসেন মন্ত্রী-প্রতিমন্ত্রী ও সশস্ত্র বাহিনীর শীর্ষ নেতাদের সঙ্গে। অভিযোগ রয়েছে, সেনাবাহিনীকে আন্দোলনে গুলি চালাতে চাপ দেন তিনি।

অন্যদিকে, আন্দোলনকারীদের পক্ষ থেকে নেওয়া হয় ‘ডু অর ডাই’ সিদ্ধান্ত। ঘোষিত হয়, পূর্বঘোষিত ৬ আগস্ট নয়, বরং ৫ আগস্টেই হবে ‘মার্চ টু ঢাকা’। সমন্বয়কারীরা জানান, একদিন এগিয়ে আনার সিদ্ধান্ত ছিল কৌশলগত-একটি রাজনৈতিক ফাঁদ।

‘মার্চ টু ঢাকা’ ঘোষণার পর টেকনাফ থেকে তেঁতুলিয়া, কক্সবাজার থেকে পঞ্চগড়-সমগ্র বাংলাদেশ যেন একসাথে প্রস্তুত হয় চূড়ান্ত নিষ্পত্তির জন্য। রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা মনে করেন, এদিন থেকেই শেখ হাসিনার দীর্ঘ প্রায় দেড় দশকের শাসনের পতনের ঘণ্টা বেজে উঠেছিল।

ভিওডি বাংলা/জা

  • দেশজুড়ে এর পাঠক প্রিয়
আরও পড়ুন
জাতীয় নির্বাচনে ১২ কোটির বেশি হতে পারে ভোটার সংখ্যা
জাতীয় নির্বাচনে ১২ কোটির বেশি হতে পারে ভোটার সংখ্যা
দুই মেয়াদের বেশি প্রধানমন্ত্রী চান না ৮৯ শতাংশ মানুষ
দুই মেয়াদের বেশি প্রধানমন্ত্রী চান না ৮৯ শতাংশ মানুষ
৯৩৫ কোটি টাকায় যুক্তরাষ্ট্র থেকে কেনা হবে দুই জাহাজ
৯৩৫ কোটি টাকায় যুক্তরাষ্ট্র থেকে কেনা হবে দুই জাহাজ