• ঢাকা বুধবার, ১৮ ডিসেম্বর ২০২৪, ৩ পৌষ ১৪৩১
টপ নিউজ
ছনুয়া ইউনিয়নে নিজ উদ্যোগে রাস্তাঘাট মেরামত কিশোরগঞ্জে দূর্গামন্ডপ পরিদর্শন করলেন সাবেক এমপি বিলকিস ইসলাম পুলপাড় রায়ের বাজার মন্দির পরিদর্শনে বীর মুক্তিযোদ্ধা আবদুস সালাম মালদ্বীপে রফিকুল আলম মজনুকে সংবর্ধনা শারদীয় দুর্গাপূঁজা উপলক্ষে ঢাকেশ্বরী মন্দির পূঁজা মন্ডপ পরিদর্শনে বিএনপি চীফ প্রসিকিউটর বনাম শেখ হাসিনার মামলার ৫৪তম সাক্ষ্যগ্রহণ আজ মেধা কাজে লাগালে বিশ্বে স্বনামধন্য হওয়া যায় - আবদুস সালাম হোয়াটসঅ্যাপের নতুন চমক ‘শিডিউল কল’ ঢাকেশ্বরী জাতীয় মন্দিরের পূজা প্রস্তুতি পরিদর্শন করেছেন প্রধান উপদেষ্টা প্রতিভাবান খেলোয়াড়দের দায়িত্ব রাষ্ট্র নেবে: আমিনুল হক

খাল বাঁচলে বরগুনা শহর বাঁচবে ভাড়ানি খাল এখনো বাঁচানো সম্ভব

বরগুনা প্রতিনিধি    ২৬ জুলাই ২০২৫, ১১:৪৭ এ.এম.

বরগুনা শহরের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ জলপথ ভাড়ানি খাল। নানা প্রতিবন্ধকতা সত্ত্বেও এখনো প্রবাহমান এই খালটি, যা শহরের পরিবেশ ও নৌযাতায়াত ব্যবস্থার জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। বরগুনা পৌরসভার সদিচ্ছাই পারে খালটিকে নতুন রূপ দিতে। কিন্তু দখল, দূষণ ও অবহেলার কারণে খালটি দিন দিন সংকুচিত হচ্ছে।
 
খালের দুই পাশে নতুন করে দখল হচ্ছে, পাশাপাশি বাসাবাড়ি ও দোকানের বর্জ্য খালে ফেলা হচ্ছে। এতে করে খালের পানি দূষিত হচ্ছে এবং চারপাশে দুর্গন্ধ ছড়াচ্ছে। বরগুনার সচেতন মহল বলছে, পৌরসভা দ্রুত ব্যবস্থা না নিলে খালটির পুরো সৌন্দর্য হারিয়ে যাবে।
 
বিশেষজ্ঞদের মতে, খাল দখল ও দূষণ শুধু নৌপথের সমস্যা নয়, এটি পরিবেশের জন্যও ভয়াবহ। খাল শুকিয়ে গেলে শহরের জলাবদ্ধতা বাড়বে এবং স্থানীয় বাস্তুতন্ত্র ক্ষতিগ্রস্ত হবে। বরগুনার মানুষ এখন অপেক্ষা করছে পৌরসভার কার্যকর পদক্ষেপের জন্য, যাতে ভাড়ানি খাল আবারও তার প্রাণ ফিরে পায় এবং শহরের সৌন্দর্য ও পরিবেশগত ভারসাম্য বজায় থাকে।
 
২০১৯ সালের ৮ এপ্রিল আদালতের নির্দেশে খালের পূর্ব পাশের প্রায় ৫০টিরও বেশি অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ করা হয়। এই খালটি বরগুনার খাকদোন নদী থেকে পায়রা নদীর সঙ্গে সংযুক্ত, যা স্থানীয়ভাবে ভাড়ানি খাল নামে পরিচিত। শহরের প্রধান বাজারের মধ্য দিয়ে বয়ে চলা এই খালটির দুই পাশে বহু বছর ধরে প্রায় ১৫০টির বেশি অবৈধ স্থাপনা গড়ে ওঠে। ফলে খালটি সংকুচিত হয়ে একসময় নৌযোগাযোগ বন্ধ হয়ে যায়।  
 
২০১৮ সালে পরিবেশ আইনবিদ সমিতি (বেলা) উচ্চ আদালতে একটি মামলা করে। পরে ২০১৯ সালের ৭ জানুয়ারি হাইকোর্ট খালের দুই পাশে দুই কিলোমিটার এলাকার দখল উচ্ছেদের নির্দেশ দেয়। সেই নির্দেশ অনুসারে জেলা প্রশাসন অভিযান পরিচালনা করে খালটি দখলমুক্ত করে।
 
স্থানীয় এক মুরগি ব্যবসায়ী জানান, পৌরসভার পরিচ্ছন্নতাকর্মীদের দোকানের বর্জ্য নিতে টাকা দিতে হয় তাই টাকা বাঁচাতে আমরা দোকানের সারা দিনের মুরগির লোম ও পানি কাঁচা বাজার ব্রিজের উপর থেকে নদীতে ফালাই। এতে করে আমাদের টাকা বেঁচে যায়। আজকের আপনার মাধ্যমে জানতে পারলাম এটা আমাদের কতটা ক্ষতি করে। এরপর থেকে আমি আর নদীতে দোকানের ময়লা আবর্জনা ফালাবো না।
 
স্থানীয় পরিবেশ কর্মী আরিফ রহমান বলেন, ভাড়ানি খাল একসময় খরস্রোতা ও ব্যস্ততাপূর্ণ জলপথ ছিল। এ খালের মাধ্যমে পঁচাকোড়ালিয়া, তালতলী, চালিতাতলী, বালিয়াতলীসহ বিভিন্ন এলাকায় পণ্য ও যাত্রী পরিবহন হতো। দখলদারদের কারণে খালটি আজ চলাচল অনুপযোগী হয়ে পড়েছে। তবে দখলমুক্ত করার জন্য প্রশাসনের উদ্যোগ প্রশংসনীয়। নদী ও খাল বাঁচাতে হবে আমাদের।
 
বাংলাদেশ পরিবেশ আন্দোলন (বাপা) বরগুনা শাখার সভাপতি আরিফ বলেন,আমরা বহুদিন ধরে খালটি দখলমুক্ত করার জন্য আন্দোলন করেছি। শেষ পর্যন্ত আদালতের মাধ্যমে বিষয়টি নিষ্পত্তি হয়েছে। অবৈধ দখলদারদের হাত থেকে খালটি গত বছর একাংশ মুক্ত হয়েছে, যা আমাদের বড় প্রাপ্তি। তবে নতুন করে আবার দখল ও দূষণের কবলে পড়েছে খালটি। খালের দুই পাশের ছোট ছোট ঔষধি গাছগুলো এখন ময়লার ভাগাড়ে চাপা পড়েছে। স্থানীয় দোকানদার ও পরিছন্নতা কর্মীদের সচেতন করে দখল ও দূষণের হাত থেকে রক্ষা করতে হবে। 
 
তিনি আরও বলেন, নদীর তীর গেসেই গড়ে উঠেছে বরগুনা শহর আর এই শহরের নিত্য প্রয়োজনীয় মালামাল ক্রয় বিক্রয়ের সহজ রুট হিসাবে ব্যবহার করা হয় নৌযান। এমনকি শহরের দৈনন্দিন ব্যবহৃত পানি উৎস এই খালটি।  স্থানীয়দের কাছে খালটি খুবই গুরুত্বপূর্ণ। এটি রক্ষণাবেক্ষণের দায়িত্ব আমাদের সবার নিতে হবে। এছাড়াও বরগুনার অন্যান্য দখল হওয়া খালগুলোও একইভাবে দখলমুক্ত করা হবে।
 
বরগুনা স্বাস্থ্য অধিকার জেলা ফোরামের সিনিয়র সহ-সভাপতি জাহাঙ্গীর কবীর মৃধা  বলেন, ময়লা নির্দিষ্ট জায়গায় না ফেলে কিছু অসাধু ব্যবসায়ীরা যেমন, মুরগি, কাঁচাবাজার, মাছ বাজার ও খালের পাশের ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের বর্জ্য এই খালে ফেলার কারণে পানি দূষণ হয়। হাজার হাজার পরিবার এই পানি ব্যবহার করে তাদের পরিবারের রান্না থেকে শুরু করে গোসল সাধারণত গৃহস্থালি কাজে ব্যবহার করে থাকে। এতে তারা স্বাস্থ্য ঝুঁকিতে পড়তে পারে। তাই দূষণের হাত থেকে নদীকে রক্ষা করতে সচেতনার বিকল্প নেই।
 
সচেতন নাগরিকরা বলছেন,খাল সংরক্ষণে পৌরসভার উচিত নিয়মিত পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা অভিযান পরিচালনা করা। নতুন করে দখল রোধে কঠোর নজরদারি নিশ্চিত করতে হবে।জনসচেতনতা বৃদ্ধির জন্য প্রচার কার্যক্রম চালানো প্রয়োজন।
 
ভিওডি বাংলা/জাহিদুল ইসলাম মেহেদী/এম 

  • দেশজুড়ে এর পাঠক প্রিয়
আরও পড়ুন
সাতক্ষীরা শিক্ষকদের ৫ দফা দাবি বাস্তবায়নের সংবাদ সম্মেলন
সাতক্ষীরা শিক্ষকদের ৫ দফা দাবি বাস্তবায়নের সংবাদ সম্মেলন
কিশোরগঞ্জে বিশ্ব শিক্ষক দিবসে শিক্ষকবৃন্দের ৫দফা দাবি
কিশোরগঞ্জে বিশ্ব শিক্ষক দিবসে শিক্ষকবৃন্দের ৫দফা দাবি
গুইমারায় আগুনে ১৯ টি দোকান পুড়ে ছাই
গুইমারায় আগুনে ১৯ টি দোকান পুড়ে ছাই