রাকসু নির্বাচনে প্যানেল চূড়ান্তে ব্যস্ত সংগঠনগুলো


৩৫ বছরের অচলাবস্থা কাটিয়ে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় (রাবি) কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (রাকসু) নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা করেছে প্রশাসন। আগামী ১৫ সেপ্টেম্বর ভোটের দিন ধার্য হওয়ার পর থেকেই ক্যাম্পাসে জমেছে নির্বাচনী আমেজ। সক্রিয় ছাত্রসংগঠনগুলো সম্ভাব্য প্রার্থী নিয়ে প্যানেল গঠনে ব্যস্ত, সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে চলছে নানা আলোচনা ও জল্পনা।
তবে এই উত্তেজনার মাঝেই অনাস্থা জ্ঞাপনের কারণে প্যানেল চূড়ান্ত করতে পারেনি ছাত্রদল। দাবি পূরণ না হলে নির্বাচন প্রতিহতের হুঁশিয়ারি দিয়েছে তারা। অন্যদিকে ইসলামী ছাত্রশিবির ‘ফ্যাসিবাদ বিরোধী’ বৃহত্তর জোটের পথে হাঁটার ঘোষণা দিয়েছে।
নির্বাচন কমিশনার ও সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের রাজনৈতিক সম্পৃক্ততা এবং প্রশাসনিক পক্ষপাতিত্বের অভিযোগ তুলে নির্বাচন কমিশনের প্রতি অনাস্থা জানিয়েছে ছাত্রদল। তারা দাবি করেছে, কমিশন থেকে রাজনৈতিক পদপ্রাপ্ত বা সাবেক পদধারীদের বাদ দিতে হবে এবং বর্তমান প্রশাসনের সময়ে সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের পরিবারের কেউ যেন বিশ্ববিদ্যালয়ে চাকরির জন্য আবেদন করতে না পারেন—এ মর্মে নিশ্চয়তা দিতে হবে।
শাখা ছাত্রদলের সভাপতি সুলতান আহমেদ রাহী বলেন, “নির্বাচন কমিশন সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচনের জন্য ন্যূনতম আস্থাও তৈরি করতে পারেনি। দাবি না মানলে রক্তের স্রোত পেরিয়ে হলেও নির্বাচন করতে হবে।” তবে গুঞ্জন রয়েছে, সংগঠনটির বেশ কয়েকজন নেতা ভোটে লড়তে আগ্রহী।
প্রধান নির্বাচন কমিশনার অধ্যাপক আমজাদ হোসেন জানান, তফসিল অনুযায়ী ১৫ সেপ্টেম্বরই ভোট হবে। খসড়া ভোটার তালিকা ও আচরণবিধি প্রকাশ হয়েছে, নিরাপত্তা ব্যবস্থাও জোরদার করা হচ্ছে।
প্রচার-প্রচারণায় সবচেয়ে সরব ইসলামী ছাত্রশিবির কেন্দ্র ও হল পর্যায়ে পূর্ণাঙ্গ প্যানেল সাজাচ্ছে। আগামী ২–৩ দিনের মধ্যে চূড়ান্ত প্যানেল ঘোষণা করা হবে। ফ্যাসিবাদ বিরোধী সামাজিক-সাংস্কৃতিক সংগঠন ও জেলা সমিতিগুলোর সঙ্গে জোটবদ্ধ হয়ে নির্বাচনে অংশ নেবে তারা।
শাখা সভাপতি মোস্তাকুর রহমান জাহিদ বলেন, “পূর্ণাঙ্গ প্যানেল দেওয়ার সক্ষমতা শিবিরের আছে, তবে আমরা সমমনা সংগঠনগুলোকে স্বাগত জানাই। নির্বাচন যেই জিতুক, আমরা চাই সুষ্ঠু ভোট হোক।”
অধিকার আন্দোলনের সাবেক নেতারা প্যানেল গঠনের উদ্যোগ নিয়েছেন। বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সাবেক সমন্বয়ক মেহেদী সজীব ভিপি পদে লড়ার ঘোষণা দিয়েছেন। তিনি জানান, “দল-মতের ঊর্ধ্বে উঠে অধিকার আন্দোলনের নেতাদের নিয়ে একটি ঐক্যবদ্ধ প্ল্যাটফর্ম গঠনের আলোচনা চলছে।”
বামপন্থী ছাত্রসংগঠনগুলোর মোর্চা গণতান্ত্রিক ছাত্রজোটও সামাজিক ও সাংস্কৃতিক সংগঠনকে সঙ্গে নিয়ে পূর্ণাঙ্গ প্যানেল ঘোষণা করবে এক সপ্তাহের মধ্যে।
অন্যদিকে ডাকসুর সাবেক ভিপি নুরুল হক নূরের নেতৃত্বাধীন ছাত্র অধিকার পরিষদও বহুধর্ম-বর্ণের নারী-পুরুষ নিয়ে স্বতন্ত্র প্যানেল গঠনের পরিকল্পনা করছে এবং প্রচার-প্রচারণায় সক্রিয় রয়েছে।
ভিওডি বাংলা/ এমএইচ