ভয়ংকর 'রকেট ফোর্স' গঠন করছে পাকিস্তান


চীনের মডেলে পাকিস্তানেও সেনাবাহিনীর ‘রকেট ফোর্স কমান্ড’ গঠনের ঘোষণা দিয়েছেন দেশটির প্রধানমন্ত্রী শেহবাজ শরিফ। তিনি জানান, আধুনিক প্রযুক্তিসম্পন্ন এই বাহিনী শত্রুপক্ষের ওপর ‘সব দিক থেকে’ আঘাত হানতে সক্ষম হবে। ভবিষ্যতের যেকোনো যুদ্ধ পরিস্থিতিতে ক্ষেপণাস্ত্র কার্যক্রম পরিচালনা করবে এই বিশেষ ফোর্স।
বৃহস্পতিবার (১৪ আগস্ট) পাকিস্তানের ৭৮তম স্বাধীনতা দিবস উপলক্ষে ইসলামাবাদের জিন্নাহ স্পোর্টস স্টেডিয়ামে আয়োজিত এক জাতীয় অনুষ্ঠানে এ ঘোষণা দেন প্রধানমন্ত্রী শেহবাজ শরিফ।-খবর রয়টার্সের।
শেহবাজ বলেন, ‘ঐক্য, ঈমান ও শৃঙ্খলার যে দর্শন পাকিস্তানকে গড়ে তুলেছে, সেই চেতনা আজও জাতির ভিত্তি।’ তিনি সব রাজনৈতিক দল ও সংশ্লিষ্ট পক্ষকে ‘চার্টার অব স্ট্যাবিলিটি’ তে যোগ দেওয়ার আহ্বান জানান। এটি শুধু অর্থনৈতিক পুনরুদ্ধারের জন্য নয়, বরং জাতীয় স্বার্থ রক্ষার একটি মূলভিত্তি বলেও উল্লেখ করেন তিনি।
পাকিস্তানের স্বাধীনতার তাৎপর্য তুলে ধরে শেহবাজ শরিফ বলেন, ‘পাকিস্তানের জন্ম শুধু মুক্তির নয়, এটি দ্বি-জাতি তত্ত্বের বিজয়ের প্রতীক। ১৪ আগস্ট হলো ‘মারকা-এ-হক’-সত্যের বিজয়ের দিন।’ এ সময় মোহাম্মদ আলী জিন্নাহ, আল্লামা ইকবালসহ পাকিস্তান আন্দোলনের সব নেতার প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন করেন তিনি।
ভারতের সঙ্গে সাম্প্রতিক সংঘাত প্রসঙ্গে প্রধানমন্ত্রী দাবি করেন, ভারত মিথ্যা অভিযোগে পাকিস্তানের ওপর হামলা চালিয়েছিল, তবে চার দিনের মধ্যেই তাদের অহংকার চূর্ণ হয়েছে। তিনি পাকিস্তান সেনাপ্রধান ফিল্ড মার্শাল অসিম মুনিরসহ সাহসী সব কমান্ডারদের প্রশংসা করে বলেন, “তাদের প্রতিরক্ষা কৌশল প্রজন্মের পর প্রজন্ম স্মরণীয় হয়ে থাকবে।” অসিম মুনিরকে তিনি ‘জাতির মহান সন্তান’ বলেও আখ্যায়িত করেন।
শেহবাজ শরিফ জানান, ২০২৫ সালের ১০ মে থেকে একটি ‘নতুন পাকিস্তান’ আত্মপ্রকাশ করেছে, যা যেকোনো শত্রুর বিরুদ্ধে শক্ত প্রতিক্রিয়া জানাতে প্রস্তুত। তিনি স্মরণ করিয়ে দেন, পাকিস্তান বিশ্বের সপ্তম পারমাণবিক শক্তিধর রাষ্ট্র এবং একমাত্র ইসলামি পারমাণবিক শক্তি।
১৯৯৮ সালের পারমাণবিক পরীক্ষার সময় বিদেশি চাপে সাড়া না দিয়ে জাতীয় স্বার্থে সিদ্ধান্ত নেওয়ায় নওয়াজ শরিফের ভূমিকাকে শ্রদ্ধার সঙ্গে স্মরণ করেন প্রধানমন্ত্রী। সেইসঙ্গে পারমাণবিক প্রতিরক্ষা সক্ষমতায় সহযোগিতার জন্য চীন, সৌদি আরব, তুরস্ক, আজারবাইজান ও ইরানকে ধন্যবাদ জানান।
তিনি আরও বলেন, ‘কাশ্মীর সংকট সমাধানে যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের যুদ্ধবিরতির প্রচেষ্টা প্রশংসার দাবিদার। “কাশ্মীর উপত্যকা নিরীহ মানুষের রক্তে রঞ্জিত। ফিলিস্তিন ও কাশ্মীরের জনগণ ন্যায়বিচার না পাওয়া পর্যন্ত পাকিস্তানের সমর্থন অব্যাহত থাকবে,” বলেন তিনি।’
কাশ্মীরে সহিংসতায় এখন পর্যন্ত ৯০ হাজার মানুষের প্রাণহানির কথা উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী জানান, এর মধ্যে সেনাসদস্য ও সাধারণ মানুষ-দু’পক্ষই রয়েছে। শান্তিপূর্ণ প্রতিবাদের পক্ষে অবস্থান নিলেও সহিংসতা ও অরাজকতার বিরুদ্ধে কঠোর অবস্থানের হুঁশিয়ারি দেন তিনি।
অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী ‘ব্যাটল ফর ট্রুথ’ শীর্ষক একটি ডিজিটাল স্মৃতিসৌধ উন্মোচন করেন। এই স্মৃতিসৌধে সেনাবাহিনী, নৌবাহিনী, বিমানবাহিনী, সাইবার ও মহাকাশ প্রতিরক্ষার প্রতীক তুলে ধরা হয়।
ভিওডি বাংলা/জা