হাসপাতালে ঢুকে স্বামীকে মারধর করলেন ২য় স্ত্রী


রাজবাড়ীর পাংশা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে কর্মরত এমএলএসএস মো. ফারুক হোসেনকে হাসপাতালে প্রবেশ করে প্রকাশ্যে মারধরের অভিযোগ উঠেছে বিথি আক্তার ওরফে মিষ্টি খাতুন নামের এক নারীর বিরুদ্ধে। ওই নারী ফারুকের ২য় স্ত্রী বলে জানা যায়।
রোববার (১৭ আগস্ট) দুপুর ১টার দিকে হাসপাতালের বহির্বিভাগে এ ঘটনা ঘটে। এ সময় ওই নারী ফারুককে উদ্দেশ্য করে গালিগালাজ করতে ও তিনবার তালাক উচ্চারণ করতে শোনা যায়।
বিথি আক্তার ওরফে মিষ্টি খাতুন রাজবাড়ী জেলার কালুখালী উপজেলার মদাপুর ইউনিয়নের কাঁটাবাড়িয়া গ্রামের বিল্লাল হোসেনের মেয়ে। বর্তমানে তিনি বালিয়াকান্দি উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে আউটসোর্সিংয়ের মাধ্যমে কর্মরত।
জানা গেছে, মিষ্টি খাতুন কালুখালী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে আউটসোর্সিংয়ে কাজ করার সুবাদে ফারুকের সাথে পরিচয় হয়। সেসময় সে ফারুকের নামে একটি ধর্ষণ মামলা দায়ের করেনউপজেলা । তবে বিয়ের মাধ্যমে তা মীমাংসা হয়ে যায়। কিন্তু বিয়ের পর থেকেই তাদের মধ্যে দাম্পত্য কলহ চলে আসছিল।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, আজ (১৭ আগস্ট) দুপুরে ফারুক হোসেন তার কর্মস্থল পাংশা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে দায়িত্ব পালনকালে মিষ্টি খাতুন সেখানে প্রবেশ করে অতর্কিতভাবে স্বামীকে মারধর করেন এবং তার ব্যবহৃত মোবাইল ফোনটি কেড়ে নেন। ফারুক মোবাইল ফেরত চাইলে উভয়ের মধ্যে হাতাহাতির ঘটনা ঘটে। এসময় ঘটনাটি নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা করেন হাসপাতালের মেডিকেল অফিসার ডা. এনামুল হক।
এ বিষয়ে মিষ্টি খাতুন অভিযোগ করে বলেন, “ফারুক আমার স্বামী। তবে বর্তমানে আমাদের মধ্যে দাম্পত্য সম্পর্ক নেই। আমাদের পারিবারিক মামলার রায় ইতোমধ্যেই হয়েছে। রায় আমাদের পক্ষে হলেও এখন তারা সেই রায়কে অস্বীকার করছে এবং আপিল করেছে।
আমার সঙ্গে এখন তার কোনো যোগাযোগ নেই। কিন্তু সে ফেসবুক ও টিকটকে আমাকে নিয়ে বাজে মন্তব্য করে। এমনকি কেউ আমার পোস্টে কমেন্ট করলেও সে আজেবাজে কথা বলে।
আগে যখন আমাদের সম্পর্ক ভালো ছিল, তখন ভিডিও কলে কিছু ছবি তোলা হয়েছিল। এখন সে সেই ছবিগুলো দিয়ে আমাকে ব্ল্যাকমেইল করছে—হুমকি দিচ্ছে যে ছবিগুলো ভাইরাল করে দেবে।
আমি মিডিয়ায় কাজ করি, আমার একটি নিজস্ব পেজ আছে। তাই বিভিন্ন মানুষের সঙ্গে পরিচিত হওয়া বা কারো সঙ্গে ছবি তোলা, কারো সঙ্গে ডুয়েট করা—এসব আমার কাজেরই অংশ। এগুলোকে কেন্দ্র করে আমাকে এখন ব্ল্যাকমেইল করা হচ্ছে। আমি আজ এখানে আসায় এ পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়।
মো. ফারুক হোসেন বলেন, কালুখালী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে আউটসোর্সিংয়ে চাকরিরত অবস্থায় ওই নারীর সঙ্গে তার প্রেমের সম্পর্ক গড়ে ওঠে। পরবর্তীতে একটি কুচক্রী মহলের প্ররোচনায় তিনি আমার বিরুদ্ধে রাজবাড়ী আদালতে একটি মামলা দায়ের করেন। সেই মামলার পর একে একে আরও চারটি মামলা করেন তিনি। এক পর্যায়ে বিয়ের প্রস্তাব দিয়ে জানান, বিয়ে করলে সব মামলা তুলে নেবেন। কিন্তু বিয়ের পরও প্রতিশ্রুতি রক্ষা না করে উল্টো আমাকে নানাভাবে হয়রানি করতে থাকে এবং এখন পর্যন্ত করে আসছে। আদালতে মামলাও চলমান। তারপরও আজকের এ ঘটনা ঘটালো।
পাংশা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের মেডিকেল অফিসার ডা. এনামুল হক বলেন, “আমি রোগী দেখছিলাম। হঠাৎ বাইরে হট্টগোল শুনে বের হয়ে দেখি আমাদের এক স্টাফকে এক নারী মারধর করছে ও গালাগালি দিচ্ছে। আমি পরিস্থিতি শান্ত করার চেষ্টা করি। পরে জানতে পারি তারা স্বামী-স্ত্রী। যেহেতু বিষয়টি পারিবারিক, তাই আর কিছু বলিনি।”
ভিওডি বাংলা/ এমএইচ