রাজশাহী তানোর কাটিমন আমে কোটি টাকা আয় আলামিনের


বারোমাসি কাটিমন আম চাষ করে কৃষক আলামিন বছরে কোটি টাকা আয় করছেন। অসময়ের এ সুস্বাদু আম প্রতিদিন দেশের বিভিন্ন প্রান্তে পাঠাচ্ছেন তিনি। রাজশাহীর তানোর উপজেলার মুন্ডুমালা ও গোদাগাড়ীর কাঁকনহাটের দুটি বাগানে তার প্রায় ৬ হাজার কাটিমন আম গাছে ঝুলছে।
এসব গাছ হতে এবার এক হাজার তিন’শ মণ আম পাওয়ার আশা করছেন তিনি। বর্তমানে প্রতি কেজি আম বিক্রি হচ্ছে ১৫০ থেকে ১৭০ টাকায় দরে। আলামিনের বারোমাসি কাটিমন আম চাষে এমন সফলতা দেখে অন্য কৃষকরা বারোমাসি কাটিমন আম বাগানের দিকে ঝুকতে শুরু করেছেন।
কৃষক আলামিন শুনালো তার সফলতার গল্প। আলামিন বলেন, গোপাল ভোগ ন্যাংড়া, আম্মপালি বারি-ফোর খিরসা ব্যানানা গৌরমতি ফজলি আসীনা সহ প্রায় ২২ রকম আম ধরে তার বাগানে। আম একটি সুস্বাদু মৌসুমী ফল। মৌসুমী ফলের মধ্যে সবার সেরা পছন্দের তালিকায় থাকে সুস্বাদু আম। মৌসুমের আম এক সঙ্গে পাক ধরে তাই এর দাম নাগালের মধ্যে থাকে ক্রেতাদের।
দাম ক্রেতাদের নাগালের মধ্যে থাকে কিন্তু চাষীরা উৎপাদন খরচ তুলতে পারে না। তাদের লীজকৃত জমিতে আম বাগান করে কৃষি শ্রমিক সহ অন্য খরচ অনেক বেশি পড়ে। তাই তিনি গত চার বছর আগে বারোমাসি কাটিমন জাতের আমের দিকে ঝুঁকতে শুরু করেন। আর তাতে সফলতা দেখা পান তিনি।
আলামিন বলেন, মুন্ডুমালা আইড়া মোড়ে প্রায় ৩৮ বিঘা ও কাকনহাটে ৪৪ বিঘা জমির উপরে থাকা আম বাগান দুটি তিন বছরের জন্য লিজ নেন। পাঁচ মিশালি বাগানে মৌসুমে আম বেচে খরচ ওঠে না। তাতে তার লোকসান হতে থাকে।
এমন সময় তার বারোমাসি কাটিমন আম চাষ করার আগ্রহ জাগে। এরপরে দুই বাগানে প্রায় ৬ হাজার কাটিমন আম গাছ লাগান। গাছ লাগানোর এক বছরের মাথায় আম ধরতে শুরু করে। এ কাটিমন আম অসময়ে ধরায় বাজারে দাম যাওয়া যায় বেশি।
আলামিন বলেন, কাটিমন আম বছরে তিনবার ধরলেও আমরা দুইবার নেই। আর আমের ভরা মৌসুমে কাটিমন আমের ফুল ভেঙ্গে দেয়া হয়। কারণ বছরে দুইবার অসময়ে এ আম পেলে দাম ভাল ও ফলন বেশি পাওয়া যায়।
তিনি আরো বলেন, কাটিমন আমের ভরা মৌসুম চলছে। আগষ্ঠ ও সেপ্টেম্বর দুইমাস ও ফ্রেবয়ারি ও মার্চ মাসে একবার পাওয়া যাবে।
তবে সবচেয়ে ফ্রেবয়ারি মাসে কার্টিমন আমে দাম বেশি থাকে। সেসময় অন্য জাতের আম গাছে মুকুল আসতে শুরু করে। সেসময় এ পাকা কাটিমন আম আমরা বাজারে বেশি দামে বিক্রি করতে পারি। প্রায় ২৫০ থেকে ৩০০ টাকা পর্যন্ত প্রতি কেজি বিক্রি হয়ে থাকে।
তিনি বলেন, আম ছোট থাকতেই আমে প্যাকেট পরানো হয়। প্যাকেট পরানোর কারণে পোকা আক্রমণ করতে পারে না এবং রং ভাল থাকে। কীটনাশক ব্যবহার করতে হয় না।
আলামিন বলেন, এ কাটিমন আম অসময়ে দুইবার বিক্রি করলে খরচ বাদে তার আয় থাকে ৮০ থেকে ৯০ লাখ টাকা।
কৃষক আলামিন বরেন্দ্র অঞ্চলে আম চাষ করলে ও তার বাড়ি চাঁপাইনবাবগঞ্জের কানসাট শ্যামপুর ইউপির বাবুপুর গ্রামে। তার পিতার নাম ওয়াজেদ আলী। দুই ভাই এক বোনের মধ্যে আলামিন সবার বড় ছেলে।
ভিওডি বাংলা/ এমএইচ