চিলমারীতে সমবায় সমিতির নামে ৪ কোটি টাকার প্রতারণা


কুড়িগ্রামের চিলমারী উপজেলার রমনা ইউনিয়নের জোড়গাছ নতুন বাজার এলাকায় অবস্থিত দারিদ্র্যমুক্ত বহুমুখী সমবায় সমিতির বিরুদ্ধে সহস্রাধিক সদস্যের প্রায় ৪ কোটি টাকা আত্মসাতের অভিযোগ উঠেছে।
ষাটোর্ধ্ব প্রতারিত সদস্য ছকিনা বেগম কান্নাজড়িত কণ্ঠে বলেন, “বাবা, মুই ভিক্ষা করি খাং, মাটি কাটার কাম করি। সারা জীবনের জমা সাড়ে ছয় লাখ টাকা সমিতিত রাখছিলাম। এখন শুনি সমিতিত টেকা নাই। মুইতো এ্যালা পাগল হইয়া যাম!”
ভুক্তভোগীরা জানান, সমিতিটি ২০০৭ সালের জুন মাসে প্রতিষ্ঠিত হয় এবং একই বছর উপজেলা সমবায় অফিস থেকে রেজিস্ট্রেশন পায়। শুরুতে উচ্চ হারে লভ্যাংশের প্রলোভন দেখিয়ে সদস্য সংগ্রহ করে প্রতিষ্ঠানটি। ধীরে ধীরে প্রায় তিন হাজার সদস্যের কাছ থেকে প্রায় ৪ কোটি টাকা জমা নেয় তারা।
কিন্তু চলতি বছর থেকে সমিতির কার্যক্রম বন্ধ হয়ে যায়। এরপর থেকে টাকা ফেরত চাইলে কর্তৃপক্ষ নানা টালবাহানা শুরু করে। রোববার (৫ অক্টোবর) দুপুরে ক্ষুব্ধ সদস্যরা জোড়গাছ নতুন বাজার এলাকায় বিক্ষোভ ও মানববন্ধন করেন।
ভুক্তভোগীদের মধ্যে খড়খড়িয়া এলাকার রিপন মিয়া (২ লাখ ৩০ হাজার টাকা), থানাহাট ইউনিয়নের সবুজপাড়া এলাকার জয়ন্ত রায় জয়ন (১ লাখ ২২ হাজার), সরকারপাড়া এলাকার এরশাদুল হক (৮০ হাজার), জোড়গাছ সাতঘড়িপাড়া এলাকার সুফিয়া বেওয়া (১ লাখ ২৮ হাজার), জেলেখা বেওয়া (১ লাখ ৪৮ হাজার), কসভান বেওয়া (৬০ হাজার) ও মিম আক্তার (৩৬ হাজার ৫০০ টাকা)সহ প্রায় ৩ হাজার সদস্য ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন বলে জানা গেছে।
সমিতির সম্পাদক নুর আলম বলেন, “সমিতির পরিচালক আনিসুর রহমান আনিস ও মিল্টন মিয়া ১৭ জন কর্মচারীর অর্থ উত্তোলনের কাগজপত্র নিজেদের কাছে রেখেছেন। তাই আমরা হিসাব দিতে পারছি না। তবে এক সপ্তাহ আগে ৯৫ লাখ টাকা পরিশোধের জন্য সাতটি দলিল মূল হিসেবে জমা দেওয়া হয়েছে। সমিতিতে আর কোনো টাকা নেই।”
সমিতির পরিচালক (ঋণ) আনিসুর রহমান আনিসের সঙ্গে মুঠোফোনে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলে তাকে পাওয়া যায়নি।
ভিওডি বাংলা-মো. মশিউর রহমান বিপুল/জা