• ঢাকা বুধবার, ১৮ ডিসেম্বর ২০২৪, ৩ পৌষ ১৪৩১

সড়ক নিরাপত্তা করতে রাজনৈতিক সদিচ্ছা প্রয়োজন: নিসচা

নিজস্ব প্রতিবেদক    ১ ডিসেম্বর ২০২৫, ০৩:০৮ পি.এম.
ছবি: ভিওডি বাংলা

সড়ক নিরাপত্তা করতে সকল রাজনৈতিক সংগঠন গুলোর সদিচ্ছার প্রয়োজন বলে গুরুত্ব আরোপ করেন নিরাপদ সড়ক চাই (নিসচা) কেন্দ্রীয় মহাসচিব এসএম আজাদ।

তিনি বলেন, রাজনৈতিক সদিচ্ছা মানে কেবল নতুন আইন প্রণয়ন নয়-বরং কঠোর প্রয়োগ, আন্তঃমন্ত্রণালয় সমন্বয়, এবং দীর্ঘমেয়াদি কর্মপরিকল্পনা।

রোববার (১ ডিসেম্বর) জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে নিরাপদ সড়ক চাই(নিসচার) সাফল্যের ৩২ বছর প্রতিষ্ঠা বার্ষিকী  উদযাপন উপলক্ষে এক র্যালী শেষে  মানববন্ধনে একথা বলেন।

নিসচার মহাসচিব বলেন, বাংলাদেশে সড়ক দুর্ঘটনা একটি বিশাল মহামারী রূপ ধারন করেছে। প্রতি বছর হাজার হাজার মানুষ সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত হচ্ছেন।এবং যত লোক নিহত হচ্ছেন তার তিন গুন লোক বেশি আহত ও পঙ্গুত্ব বরণ করেন।

তিনি বলেন নিসচার ৩২ বছরের পথ চলায় সব চেয়ে বেশি যে বিষয়টি উপলব্ধি করেছি তা হলো যে দল সরকারে বা বিরোধী দলে থাকে তাদের সদিইচ্ছা ছাড়া সড়কে শৃঙ্খলা ফেরানো সম্ভব নয়।আমরা ৩২ বছর বছর যাবত জনগণকে সচেতন করে আসলেও তারা আবার পুনরায় আগের অবস্থানে ফিরে যায়।
কারন তারা দেখে ফুটপাত দখল হয়ে গেছে,যত্রতত্র অবৈধভাবে ব্যাটারী চালিত রিকশা, গাড়ী চলছে,ফুটপাতে মোটরসাইকেল চলছে। আইনশৃঙ্খলা বাহিনী কোন ব্যবস্থা নিচ্ছেন না, সরকারের বিশেষ ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা নিয়ম শৃঙ্খলা না মেনেই উল্টো দিকে দ্রুত গতিতে গাড়ি চালিয়ে যাচ্ছেন। পরিবহন মালিক শ্রমিকরা যেনতেন দাবির  কারনে ধর্মঘট ডেকে রাস্তা অচল করে দিচ্ছেন জনগণের ভোগান্তি সৃষ্টি করছেন। তখন সাধারণ নাগরিক তাদের সচেতনতার জায়গায় আর থাকতে পারেন না।

ত্রয়োদশ জাতীয় নির্বাচনের প্রাক্কালে  নিরাপদ সড়ক চাই এর পক্ষ থেকে উদাত্ত আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, নির্বাচনে যেই দলই আসুক, আপনাদের অঙ্গীকার করতে হবে যে কোন মূল্যে সড়কে শৃঙ্খলা ফিরিয়ে আনতে হবে।আপনাদের ত্যাগ স্বীকার করতে হবে পরিবহন সেক্টরের বেশি ভোট পাওয়ার আশা করলে এই শৃঙ্খলা কখনোই ফিরিয়ে আনা সম্ভব নয়।মানুষের জান মাল নিরাপত্তাই আপনাদের প্রধান অঙ্গীকারবদ্ধ থাকতে হবে। যেনতেন দাবি নিয়ে যাতে পরিবহন সেক্টর ধর্মঘট ডেকে দেশকে অচল করতে না পরে, সরকারের সুনাম নষ্ট না করতে পারে সেদিকে কঠোর হস্তে দমন করতে হবে। এছাড়াও রাষ্ট্রের  দায়িত্ব প্রতিটা নাগরিককে নিরাপত্তা দেওয়া ও সড়কে দূর্ঘটনা রোধ করে শৃঙ্খলা ফিরিয়ে আনা।

সকল রাজনৈতিক দলগুলোর প্রতি দাবি জানিয়ে বলেন, তফসিলের আগে কিংবা পরে যখনই রাজনৈতিক ইশতেহার ঘোষনা করবেন সেখানে অবশ্যই নিরাপদ সড়কের বিষয়টি যুক্ত থাকতে হবে। আমরা আপনাদের দিকে তাকিয়ে আছি। আপনাদের ইশতেহারে কি ঘোষনা করেন। আমরা আর সাধারণ মানুষের  ভবিষ্যত জীবন নিয়ে ছিনিমিনি খেলা দেখতে চাই না। 

উপস্থিত বক্তারা বলেন,সড়ক দুর্ঘটনার অন্যতম কারণগুলো হচ্ছে, চালকদের অদক্ষতা, বেপরোয়া গতিতে গাড়ি চালানো, মোটরসাইকেল চালানোর সময় হেলমেট ব্যবহার না করা। ওভারটেকিং করার প্রবল মানসিকতা, ড্রাইভিং লাইসেন্সপ্রাপ্তিতে স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতার অভাব, জনগণের সচেতনতার অভাব, ট্রাফিক আইন না মানা ইত্যাদি। 

সড়ক দুর্ঘটনার অন্যান্য কারণের মধ্যে রয়েছে, অনেক সড়ক-মহাসড়ক পরিকল্পনাহীনভাবে নির্মাণ, নির্দিষ্ট লেন ধরে গাড়ি না চালিয়ে সড়কের মাঝখান দিয়ে গাড়ি চালানোর প্রবণতা, রাস্তায় বিপজ্জনক বাঁক বিদ্যমান থাকা, ফিটনেসবিহীন গাড়ি চালানো, মাদকসেবন করে গাড়ি চালানো, ভুল পথে গাড়ি চালানো, রাস্তায় চলাচলকারী যাত্রী বা পথচারীদের ট্রাফিক আইন না মানার প্রবণতা, ফুটপাত ব্যবহার না করে রাস্তার মাঝখান দিয়ে পথচারীদের চলাচল, রাস্তা পারাপারের জন্য ওভারব্রিজ থাকলেও তা ব্যবহার না করা, রাস্তার উপর বা ফুটপাতে দোকানপাট সাজিয়ে ব্যবসা-বাণিজ্য করা, যত্রতত্র গাড়ি পার্কিং করা, দুর্বল ও দুর্নীতিগ্রস্ত ট্রাফিকব্যবস্থা এবং সর্বোপরি রাস্তায় চলাচলে বিদ্যমান নিয়ম-কানুন প্রতিপালনে যাত্রীদের অনীহা।

মানববন্ধনে এসময় উপস্থিত ছিলেন  কেন্দ্রীয় ভাইস চেয়ারম্যান লিটন সরদার,যুগ্ম মহাসচিব একে আজাদ,সাংগঠনিক সম্পাদক আবদুর রহমান,অর্থ সম্পাদক আনোয়ার  হোসেন,সদস্য নাসিমুল মুমিনসহ নিসচার সদস্যরা।

ভিওডি বাংলা/ এমএইচ

  • দেশজুড়ে এর পাঠক প্রিয়
আরও পড়ুন
বুধবার উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদের জরুরি সংবাদ সম্মেলন
বুধবার উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদের জরুরি সংবাদ সম্মেলন
পুলিশে বড় রদবদল
পুলিশে বড় রদবদল
কোন উপদেষ্টা পদে থেকে নির্বাচনে অংশ নিতে পারবেন না : আনোয়ারুল
কোন উপদেষ্টা পদে থেকে নির্বাচনে অংশ নিতে পারবেন না : আনোয়ারুল