• ঢাকা বুধবার, ১৮ ডিসেম্বর ২০২৪, ৩ পৌষ ১৪৩১
টপ নিউজ
ছনুয়া ইউনিয়নে নিজ উদ্যোগে রাস্তাঘাট মেরামত কিশোরগঞ্জে দূর্গামন্ডপ পরিদর্শন করলেন সাবেক এমপি বিলকিস ইসলাম পুলপাড় রায়ের বাজার মন্দির পরিদর্শনে বীর মুক্তিযোদ্ধা আবদুস সালাম মালদ্বীপে রফিকুল আলম মজনুকে সংবর্ধনা শারদীয় দুর্গাপূঁজা উপলক্ষে ঢাকেশ্বরী মন্দির পূঁজা মন্ডপ পরিদর্শনে বিএনপি চীফ প্রসিকিউটর বনাম শেখ হাসিনার মামলার ৫৪তম সাক্ষ্যগ্রহণ আজ মেধা কাজে লাগালে বিশ্বে স্বনামধন্য হওয়া যায় - আবদুস সালাম হোয়াটসঅ্যাপের নতুন চমক ‘শিডিউল কল’ ঢাকেশ্বরী জাতীয় মন্দিরের পূজা প্রস্তুতি পরিদর্শন করেছেন প্রধান উপদেষ্টা প্রতিভাবান খেলোয়াড়দের দায়িত্ব রাষ্ট্র নেবে: আমিনুল হক

নির্বিকার প্রশাসন

অনিয়মতান্ত্রিকভাবে বালু উত্তোলন ও বিক্রির অভিযোগ

   ২৫ মে ২০২৫, ০৬:২০ পি.এম.

পাবনা প্রতিনিধি: 
পাবনার বেড়া উপজেলার হুরাসাগর নদীতে অনিয়মতান্ত্রিভাবে চলছে বালু উত্তোলন। সেইসঙ্গে নীতিমালা উপেক্ষা করে চলছে অবাধে বালু বিক্রি। স্থানীয় একটি প্রভাবশালী চক্র প্রকাশ্যে বালু উত্তোলন ও বিক্রি করলেও নিশ্চুপ প্রশাসন।

সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, বাঙ্গালী-করতোয়া, ফুলজোর-হুরাসাগর নদীর সিস্টেম ড্রেজিং/পুনঃখনন সহ তীর সংরক্ষণ প্রকল্পের আওতায় চলছে নদী খননকাজ। নিয়ম অনুযায়ী নদী খনন করার কথা ২৬ ইঞ্চি ড্রেজার দিয়ে। কিন্তু ঠিকাদার কাজ করছেন ১৮ ইঞ্চি ড্রেজার দিয়ে। আবার খননকৃত বালু/মাটি ডাইকে রেখে জেলা পানি সম্পদ উন্নয়ন ও ব্যবস্থাপনা কমিটির সিদ্ধান্ত মোতাবেক নিলামের মাধ্যমে বিক্রি করার কথা। কিন্তু মানা হচ্ছে না সেই নীতিমালাও।

সম্প্রতি সরেজমিনে বেড়া উপজেলার বৃশালিখা ঘাট, ডাকবাংলো ঘাট, পায়না ঘাট ও মোহনগঞ্জ ঘাট এলাকায় গিয়ে দেখা যায়, নিয়ম না মেনে অপেক্ষাকৃত ছোট ড্রেজার দিয়ে চলছে নদী খনন। খননকৃত বালু/মাটি স্তুপ করে রাখা হয়েছে নদীপাড়ে কৃষি জমিতে। আবার চুক্তি অনুযায়ী যে পরিমাণ নদী ড্রেজিং করে বালু তোলার কথা, তার চেয়ে কয়েকগুণ বেশি পরিমাণ বালু তোলা হচ্ছে। অভিযোগ রয়েছে, রাতের বেলাতেও চলছে অবাধে বালু তোলার কাজ।

অন্যদিকে আবার নিলাম ছাড়াই প্রকাশ্যে খননকৃত বালু/মাটি বিক্রি করছেন ঠিকাদার। সরেজমিনে তার সত্যতা পাওয়া যায়। নদী থেকে তোলা বালু বলগেটে তীরে নিয়ে আসার পর নদী থেকেই ট্রাকযোগে বিক্রি হচ্ছে বিভিন্ন এলাকায়। প্রতি ট্রাক বালু/মাটি বিক্রি হচ্ছে ১৪০০-১৬০০ টাকায়। বালু বহনকারী ট্রাকচালকরা জানালেন এ তথ্য।

এদিকে, হুরাসাগর ছাড়া পদ্মা ও যমুনা নদীতেও প্রতিদিন অবৈধভাবে লাখ লাখ ঘনফুট বালু উত্তোলন করছে স্থানীয় কিছু প্রভাবশালী রাজনৈতিক নেতা। বর্তমানে বিএনপির কিছু নেতা এই অপকর্মের সাথে জড়িত। অতিরিক্ত বালু তোলায় নদীর তলদেশ ক্ষতিগ্রস্থ হচ্ছে। ভাঙন দেখা দিয়েছে নদীর বিভিন্ন এলাকায়। ক্ষতিগ্রস্থ হচ্ছে কৃষি জমি। ইতিমধ্যে নদীর পাড়ে বেশকিছু গ্রাম বিলীন হয়ে গেছে। অনেক গ্রাম হুমকির মুখে। ভাঙন আতঙ্কে দিন কাটাচ্ছে নদীপাড়ের বাসিন্দারা।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, ডাকবাংলা ঘাটে অবৈধভাবে বালু বিক্রি করছেন বেড়া পৌর যুবদলের যুগ্ম আহ্বায়ক জাহান খাঁ। বৃশালিকা ঘাট অবৈধভাবে বালু বিক্রি করছেন আবু সালেক ও টুটুল। অধীন নগর পয়েন্টে অবৈধভাবে বালু বিক্রি করছেন সাঁথিয়া উপজেলা স্বেচ্ছাসেবকদলের সদস্য সচিব লিখন ও বেড়া উপজেলা জামায়াত ইসলামীর সদস্য মোশারফ। দলীয় প্রভাব খাটিয়ে তারা অনিয়মতান্ত্রিকভাবে অবাধে বালু উত্তোলন ও বিক্রি করছেন। কিন্তু দেখার কেউ নেই।

এ বিষয়ে অভিযুক্ত বেড়া পৌর যুবদলের যুগ্ম আহ্বায়ক জাহাঙ্গীর হোসেন জাহান খাঁ বলেন আমি বালু উত্তোলন ও বিক্রির সাথে কোনভাবেই জড়িত না। একটি পক্ষ মিথ্যা অভিযোগ তুলছে।

বেড়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বেড়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. মোরশেদুল ইসলাম বলেন বেড়া উপজেলায় কোন বালুমহাল নাই। তবে, হুরাসাগর নদীতে সেনাবাহিনী কর্তৃক ড্রেজিং প্রকল্প চলমান রয়েছে এবং বিআইডব্লিওটিএ কর্তৃক নৌপথ সচল রাখার জন্য যমুনা নদীর বিভিন্ন জায়গায় ড্রেজিং করে। ড্রেজড ম্যাটেরিয়াল নির্ধারিত পদ্ধতিতে নিষ্পত্তি হচ্ছে। এছাড়া, কোথাও মাটি কাটা অ অবৈধ বালু উত্তোলনের তথ্য পেলে নৌপুলিশ- থানা পুলিশ, সেনাবাহিনীর সহযোগিতায় মোবাইল কোর্ট পরিচালনা করা হচ্ছে এবং নিয়মিত মামলা দায়ের হচ্ছে। অবৈধ বালু উত্তোলনের তথ্য পেলেই অভিযান করে আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে এবং  অব্যাহত থাকবে। 

বেড়া মডেল থানার ওসি অলিউর রহমান বলেন, এখানে পুলিশের কিছু করণীয় নেই। আমাদের উপরে প্রশাসন রয়েছে। তাদের কাজ। তারা যখন অভিযান চালাবেন তখন পুলিশের সহযোগিতা চাইলে তখন ফোর্স দেই। 

বেড়া পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী ও জেলা পানি সম্পদ উন্নয়ন ও ব্যবস্থাপনা কমিটির সদস্য সচিব জাহিদুল ইসলাম বলেন এই কাজের সাথে পাবনা পানি উন্নয়ন বোর্ড জড়িত না। বগুড়া ও সিরাজগঞ্জ জেলার পানি উন্নয়ন বোর্ড জড়িত। 

সিরাজগঞ্জ জেলার পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মোখলেছুর রহমান বলেন, এটা বাংলাদেশ সেনাবাহিনী নিয়ন্ত্রণ করেন। আমরা কিছু বলতে পারবো না।

এ বিষয়ে বিটিসি এমএলবি জেভি এর নির্বাহী পরিচালক (অপারেশন) অবসরপ্রাপ্ত মেজর শেখ আশরাফুল বারী বলেন, বাংলা ড্রেজার দিয়ে যারা কেটে বিক্রি করছে তাদের সাথে আমাদের কোন সংশ্লিষ্টটা নাই, আমরা নিয়ম মেনেই কাটছি। যারা এভাবে কেটে বিক্রি করছে তারা অবৈধ ।

উল্লেখ্য, বাঙ্গালী-করতোয়া, ফুলজোর-হুরাসাগর নদীর সিস্টেম ড্রেজিং/পুনঃখনন সহ তীর সংরক্ষণ প্রকল্পের ড্রেজিং কাজ ২০২৪ সালের ৩১ মার্চ শেষ হবার কথা থাকলেও সংশ্লিষ্ট ঠিকাদার কাজ শেষ করতে পারেননি। পরে ড্রেজিং কাজের মেয়াদ প্রথম দফায় ২০২৫ সালের ২৮ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত বাড়ানো হয়। উল্লেখিত সময়ের মধ্যেও কাজ সম্পন্ন করতে না পারায় দ্বিতীয় দফায় আবার ২০২৫ সালের ৩০ জুন পর্যন্ত বাড়ানো হয়েছে।

সচেতন মহলের অভিযোগ, কাজ শেষ করতে না পারার অজুহাতে বারবার সময় বাড়িয়ে ঠিকাদার বিপুল পরিমাণ বালু/মাটি উত্তোলন ও বিক্রি করে ফায়দা হাসিল করছে।

ভিওডি বাংলা/

  • দেশজুড়ে এর পাঠক প্রিয়
আরও পড়ুন
সাতক্ষীরা শিক্ষকদের ৫ দফা দাবি বাস্তবায়নের সংবাদ সম্মেলন
সাতক্ষীরা শিক্ষকদের ৫ দফা দাবি বাস্তবায়নের সংবাদ সম্মেলন
কিশোরগঞ্জে বিশ্ব শিক্ষক দিবসে শিক্ষকবৃন্দের ৫দফা দাবি
কিশোরগঞ্জে বিশ্ব শিক্ষক দিবসে শিক্ষকবৃন্দের ৫দফা দাবি
গুইমারায় আগুনে ১৯ টি দোকান পুড়ে ছাই
গুইমারায় আগুনে ১৯ টি দোকান পুড়ে ছাই