• ঢাকা বুধবার, ১৮ ডিসেম্বর ২০২৪, ৩ পৌষ ১৪৩১

রাজশাহীতে ভরা মৌসুমেও বাড়তি চালের দাম

   ৫ জুলাই ২০২৫, ০৬:১৬ পি.এম.
রাজশাহীতে ভরা মৌসুমেও বাড়তি চালের দাম

রাজশাহী ব্যুরো 

রাজশাহীতে ভরা মৌসুমেও চড়া চালের দাম। বাড়তি দামে কিনতে হিমশিম খাচ্ছে ক্রেতারা। গত তিন সপ্তাহ ধরে খুচরা বাজারে সরু চালের দাম কেজিতে ৫-১০ টাকা পর্যন্ত বেড়েছে। মোটা চালের দামও কেজিতে ৪-৮ টাকা বেড়েছে। চালকল মালিকরা বলছেন, ধানের দাম বেশি হওয়ার কারণে তারা চালের দাম বাড়াতে বাধ্য হচ্ছেন। অন্যদিকে, খুচরা বিক্রেতারা বলছেন, ঈদের পর থেকে চালের দাম বস্তাপ্রতি প্রায় ৩০০ টাকা পর্যন্ত বেড়েছে।

শুক্রবার, (০৪ জুলাই) রাজশাহী নগরীর বিভিন্ন বাজারে দেখা যায় বাড়তি দামে বিক্রি হচ্ছে চাল। যে চিত্র চলমান গত তিন সপ্তাহ ধরে। পাইকারি পর্যায়ে মানভেদে ঈদুল আজহার আগে ৭০ থেকে ৭২ টাকায় বিক্রি হওয়া মিনিকেট ৮০ থেকে ৮৪ টাকা কেজি, ৫৩ থেকে ৫৪ টাকার আটাশ চাল ৬০ থেকে ৬২ আর নাজিরশাইল ৭৭ থেকে ৮০ টাকা থেকে বেড়ে বিক্রি হচ্ছে ৮০ থেকে ৮৫ টাকা পর্যন্ত। আর পাইকারির চেয়ে ২-৫ টাকা বাড়তি দামে চাল বিক্রি হচ্ছে খুচরা বাজারে।

ভরা মৌসুমে চালের দাম বেশি হওয়ায় সাধারণ মানুষ সমস্যায় পড়েছে। বিশেষ করে, নিম্ন আয়ের মানুষেরা বেশি কষ্ট পাচ্ছে। এই পরিস্থিতি থেকে উত্তরণের জন্য সরকারের পদক্ষেপ নেওয়া প্রয়োজন বলে তারা মনে করছেন। ভরা মৌসুমেও চালের দাম বাড়ার কারণ হিসেবে বিক্রেতারা বলছেন ধানের দাম বেশি হওয়ার কারণে তাদের বেশি দামে চাল কিনতে হচ্ছে। ফলে, তারা বাধ্য হয়ে চালের দাম বাড়িয়েছেন। এছাড়াও তারা জানান ঈদের পর চালের দাম সাধারণত বাড়ে। কারণ, এই সময় চাহিদা বাড়ে এবং সরবরাহ কিছুটা কমে যায়।

বাজারে চাল কিনতে আসা কয়েকজন ক্রেতার সাথে কথা বললে তারা চালের দাম বাড়তি থাকায় উদ্বেগ প্রকাশ করেন। রহিম আলী নামের একজন বলেন, ‘আমরা সাধারণ মানুষ এতটাকা দিয়ে যদি চাল কিনতেই হয় তাহলে অন্যান্য বাজার কিনবো কিভাবে? ২ কেজি চাউল কিনতেই ১৫০ টাকা শেষ। এভাবে যদি চাউল এত বেশি টাকা দিয়ে কিনতে হয় তাহলে তো আমরা সমস্যায় পড়বো’। দোকানে চাল কিনতে আসা রইস উদ্দিন বলেন, ‘আমরা যারা নির্দিষ্ট আয় করি বা যারা খেটে খাই তাদের কষ্ট তো সরকার বোঝে না, ব্যবসায়ীরাও বোঝে না। দাম বাড়ার কারণে আমি এখন চাল কম করে কিনছি’।
মহানগরীর সাহেববাজারের চাল ব্যবসায়ী সাইদুল ইসলাম বলেন, ‘দাম বাড়ানোয় আমাদের কোনো হাত নেই। কারণ আমরা পাইকারি দরে কিনে সামান্য লাভে বিক্রি করি। দাম বাড়ার কারণ চালকল মালিকরাই ভালো বলতে পারবেন’।

নওদাপাড়া এলাকার চাল ব্যবসায়ী শাহিন আলী বলেন, ‘আমরা যে দামে চালের বস্তা ক্রয় করি তাতে সামান্য পরিমাণ লাভ রেখে তা বিক্রি করে দেই। চালের দাম বাড়ানোয় একটি সিন্ডিকেট চক্র কাজ করছে’।
চালকলের মালিকরা বলছেন, ধানের দাম বাড়তি থাকায় তারা সে অনুযায়ী চাল বিক্রি করছেন। পবা উপজেলার নওহাটা পৌরসভার চাল ব্যবসায়ী সাইফুল আলী বলেন, ‘আমরা ধান কিনে তারপরে চাল করি। এখন ভরা মৌসুম হলেও ধানের দাম বাড়তি। কৃষকেরা গত বছরে ধানের দাম শেষের দিকে ভালো পেয়েছিলো। তাই তারা এবার শেষের দিকে বেশি দামে বিক্রির আশায় এখন ধান বিক্রি করছে না । আবার অনেক বড় বড় কোম্পানি তারা ধান কিনে স্টোক করে রেখেছে। এজন্য ধান এবং চালের দাম বেশি’।

জেলার বাগমারা উপজেলার দামনাশ বাজারের ধানের আড়তদার শহিদুল ইসলাম বলেন, ‘এখন ধানের মৌসুম হলেও এই ভরা বাজারে ধানের আমদানি কম। যাদের কাছে বেশি টাকা আছে তারা পরে বাড়তি দামে বিক্রি করার আশায় এখন ধান স্টোক করে রেখেছন। আবার অনেক চাষীরাও শেষের দিকে বিক্রির আশায় এখন বাজারে ধান বিক্রি করছেন না। তাই বাজারে ধানের কৃত্রিম সংকট তৈরী হয়েছে। সেজন্য বাজারে চালের দাম বাড়তি’।

রাজশাহী চালকল মালিক সমিতির সভাপতি রফিকুল ইসলামের কাছে এই বিষয়ে জানতে মুঠোফোনে কল দেওয়া হলে তিনি বলেন, ‘্আমার শরীর অসুস্থ, আমি আপনাকে পরে ফোন দিচ্ছি’।
এছাড়াও এদিন সবজির বাজার স্থিতিশীল থাকতে দেখা যায়। বাজারে আলু ২০ থেকে ২৫ টাকা কেজি, পেঁয়াজ ৫০ থেকে ৫৫, আদা ১২০ থেকে ১৪০, রসুন ১৬০ থেকে ১৮০, পটল ৩০ থেকে ২৫, তরই ২৫ থেকে ৩০, করলা ৮০ থেকে ৯০, লাউ ৩৫ থেকে ৪০, শসা ৪০ থেকে ৬০, কাঁচা মরিচ ১১০ থেকে ১২০ টাকা কেজি প্রতি বিক্রি হচ্ছে।

এদিকে সরবরাহ ভালো থাকায় গত সপ্তাহের তুলনায় এ সপ্তাহে ডিম, মুরগি ও মাছের দাম সামান্য কমেছে। এখন বাজারে প্রতি কেজি ব্রয়লার মুরগি বিক্রি হচ্ছে ১৫০ থেকে ১৬০ টাকায়। সোনালি মুরগি এ সপ্তাহে বিক্রি হচ্ছে ২৮০ টাকায়। এর আগের সপ্তাহে বিক্রি হয়েছিল ২৫০ থেকে ২৬০ টাকায়। বাজারে ফার্মের মুরগির ডিমের ডজন ১২০ থেকে ১২৫ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।

ভিওডি বাংলা/ এমএইচ

  • দেশজুড়ে এর পাঠক প্রিয়
আরও পড়ুন
ট্রাক-মাইক্রোবাসের সংঘর্ষে শিমুল-হাবিবসহ আহত ৪
ট্রাক-মাইক্রোবাসের সংঘর্ষে শিমুল-হাবিবসহ আহত ৪
মাদারীপুরে সেই নবজাতকের ঠাঁই হলো সিঙ্গাপুর প্রবাসীর ঘরে
মাদারীপুরে সেই নবজাতকের ঠাঁই হলো সিঙ্গাপুর প্রবাসীর ঘরে
অনিয়মের অভিযোগে অবরুদ্ধ প্রধান শিক্ষককে উদ্ধার করলো পুলিশ
অনিয়মের অভিযোগে অবরুদ্ধ প্রধান শিক্ষককে উদ্ধার করলো পুলিশ