রাজশাহীতে আমন চারা রোপনে ব্যস্ত সময় কাটাচ্ছেন চাষিরা


রাজশাহীতে শুরু হয়েছে আমনের চারা রোপন মৌসুম। মাঠে মাঠে আমন ধানের চারা রোপনে ব্যস্ত সময় কাটাচ্ছেন চাষিরা। চাষিরা বলছেন- আমনের চারা রোপনে চাষিদের বৃষ্টির দিকে তাকিয়ে থাকতে হয় নি। এবছর স্বরূপে আষাঢ় ঝরেছে সম্ভাবনা জাগিয়ে। মাসজুড়েই বৃষ্টি হয়েছে। ফলে, ধানের চারা রোপনের জন্য সেচনির্ভর জমি তৈরিতে অপেক্ষা করতে হয়নি চাষিদের। বৃষ্টির জলেই মিলেছে চাহিদা। ফলে সেচ বাবদ ব্যয় সাশ্রয় হয়েছে।
রাজশাহী কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর বলছে- এবছর জেলায় ৮৪ হাজার ১০৫ হেক্টর জমিতে আমান ধান চাষের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। ইতোমধ্যে জেলার ২০ শতাংশ জমিতে ধানের চারা রোপন সম্পন্ন হয়েছে। এবছর আষাঢ়ে স্বাভাবিক বৃষ্টিপাতের ফলে চাষীরা সঠিক সময়ে বিনাসেচে চারা রোপন করতে পারছেন। এতে চাষিদের সেচ খরচ বেঁচে গেছে। এছাড়া জুলাই মাসের শুরুতে আমনের চারা রোপন শুরু হলেও চলবে আগস্টের ২০ তারিখ পর্যন্ত।
এবছর রাজশাহীতে পহেলা আষাঢ়ে বৃষ্টিপাত শুরু হয়ে পুরোমাস ঝরেছে বৃষ্টি। এরমধ্যে আষাঢ়ের শেষ ১৫ দিন অর্থাৎ জুলাই মাসের প্রথম ১৫দিনে বৃষ্টিপাত হয়েছে ৫৬৮ মিলিমিটার। এই পুরো সময়ের বৃষ্টিপাত সহযোগী হিসেবে কাজে লেগেছে আমন চাষিদের। শুধু তাই নয়-আষাঢ়ের প্রথম সপ্তাহে এই অঞ্চলের চাষীরা বৃষ্টি পানি কাজে লাগিয়ে জমিতে ফেলেছিল আমনের বীজতলা। আমনের এই মৌসুমের সূচনায় বৃষ্টি ঝরেছে আর্শীবাদ হয়ে।
রাজশাহী জেলার গোদাগাড়ী, তানোর, পবার বিভিন্ন এলাকা ঘুরে আমন চাষিদের জমিতে চারা লাগাতে ব্যস্ত সময় কাটাতে দেখা গেছে। বিশেষ করে গোদাগাড়ী ও তানোরে এই ধানের বেশি চাষ হয়। এসব উপজেলায় লাঙ্গল, ট্রাক্টর, পওয়ার ট্রিলার দিয়ে জমি চাষ করছেন কৃষক। চাষ করা জমিতে শ্রমিকদের ধানের চারা রোপন করতে দেখা গেছে।
গোদাগাড়ীর দামকুড়ার চাষী সাজ্জাদ হোসেন বলেন, বরাবরই আমন চাষের জন্য বৃষ্টির পানি দিকে তাকিয়ে থাকতে হয়। কিন্তু এবছর প্রয়োজনীয় বৃষ্টিপাত হয়েছে। এই বৃষ্টিতে জমি প্রস্তুত ও চারা রোপনের কাজ করা গেছে। এতে করে চাষিদের সেচ বাবদ টাকা বেঁচে গেছে। এখনও কমবেশি প্রতিদিন বৃষ্টিপাত হচ্ছে। আশা করা যাচ্ছে আমন চাষে পানির ঘাটতি হবে না।
জমির উদ্দিন নামের আরেক চাষী বলেন, এসব এলাকায় বেশি আদিবাসী শ্রমিকরা ধানের চারা রোপনের কাজ করে। তারা দলবেঁধে কৃষকের জমিতে কাজ করে। তাদের কাজও ভালো। তবে আদিবাসীরা ছাড়াও অন্য শ্রমিকরাও জমিতে ধানের চারা রোপন করেন। ধানের চারা রোপনের শ্রমিক সঙ্কট নেই।
কয়েকজন শ্রমিক জানায়, তারা কয়েকজনে মিলে দলে ভাগ হয়ে ধানের চারা রোপনের কাজ করেন। পারিশ্রমিক ছাড়া সকাল ও দুপুরের খাবার দেয় জমির মালিক। প্রতিদিন একেকজন শ্রমিক ৮০০ থেকে ১ হাজার টাকার কাজ করেন।
এ বিষয়ে রাজশাহী জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক উম্মে ছালমা বলেন, জেলায় ৮৪ হাজার ১০৫ হেক্টর জমিতে আমান ধানের চাষের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। বর্তমানে চাষীরা ২০ শতাংশ জমিতে ধানের চারা রোপন করেছে। এবছর আগাম বৃষ্টিপাত হয়েছে। ফলে ধারণা করা হচ্ছে লক্ষ্যমাত্রা অর্জন হবে। জুলাই মাস থেকে আমনের চারা রোপন শুরু হলেও চলবে আগস্টের ২০ তারিখ পর্যন্ত। আমন রোপনকে কেন্দ্র করে চাষীরা ব্যস্ত সময় কাটাচ্ছেন।
ভিওডি বাংলা/ এমএইচ