মিষ্টি পানের বাজারে বিশাল আকারের দর পতন


দুর্গাপুরে পানের বাজারে বিশাল আকারে দর পতন হয়েছে,হঠাৎ এই পানের বাজারে ধস নামায়,চরম সংকটের মধ্যে পড়েছে অত্র উপজেলার পান চাষীরা। অত্র এলাকায় অনেক কৃষক আছে, যারা শুধু পান চাষের উপরই নির্ভরশীল, কেউ লিজ নিয়ে, কেউ বা কারো জমি বর্গা নিয়ে পান চাষ করে, কিন্তু হঠাৎ এই পানের দাম কমে যাওয়ায়, অনেক কষ্টে জীবন যাপন করছে পান চাষিরা।
পান চাষির জয়নাল আবেদীন বলেন, এ বছরের শুরু থেকেই বৃষ্টি, অনেক রোগ বালাই মোকাবিলা করে, এই বছরের পান বরজটা অনেকটাই ভালো হয়েছে,তবে পানের দাম নেই, আগে যে মোটা ও বড় আকৃতির পান প্রতি বিড়ি ৮০থেকে১২০ টাকা পর্যন্ত বিক্রি হতো।সে পানের বিড়া এখন বিক্রি হচ্ছে ১৫থেকে৩৫টাকায়। মাঝারি এবং চিকন পানের দাম ২থেকে৫টাকা।অনেক সময় মাঝারি ও চিকন পান ব্যাপারীরা কিনছে না।
৬ নং মাড়িয়া গ্রামের মুক্তার হোসেন বলেন, আমি বিগত ২০ বছর থেকে পান চাষ করছি, এর আগে আমার বাপ দাদারা পান চাষ করতো এমন পানের বাজার জীবনে কখনো দেখিনি, পানের বাজার যদি এই অবস্থায় থাকে, তাহলে বাধ্য হয়ে আমাদের মত কৃষকদের পান বরজ ভেঙে ফেলতে হবে। কারণ এখন পানের বাজারের যে অবস্থা, তাতে নিজেদের খরচ তো দূরের কথা, পান-বরজের খরচ উঠানো বিপদ হয়ে গেছে।
চৌবাড়িয়া গ্রামের আরেক পান চাষী,রুস্তম মিয়া বলেন,আমি গত বছরে এক বিঘা মাটি বছরপ্রতি ৪০ হাজার টাকা দিয়ে লীজ নিয়,এবং সেই জায়গায় পান বরজ করি, আমার প্রায় ২লক্ষ্ ২০ হাজার টাকা খরচ হয়, এখন যে পানের বাজারের অবস্থা, আমার মূলধন তো দূরের কথা, প্রতিবছরের লিজের টাকায় দিতে পারবো কিনা তা নিয়ে দুশ্চিন্তায় আছি।
পান ব্যবসায়ী মন্টু মিয়া বলেন, দুর্গাপুর উপজেলা সপ্তাহে ছয় দিন পানের আড়ত বসে, যেমন শ্যামপুর, আলিপুর, গোপালপুর, নারায়ণপুর,দাওকান্দি, কালিগঞ্জ, এই সব আড়তে সপ্তাহে ৮ থেকে ১০ কোটি টাকা, পান কেনা বেচা হয়, এখন অর্ধেকে থেকে নেমে আসছে।
বাজার সংশ্লিষ্ট ব্যবসায়ীরা বলেন,পানের বাজারে যদি এই অবস্থা থাকে, আর সময় মতো ন্যায্য দাম নিশ্চিত না করা হয়, তাহলে খুব শীগ্রই কৃষকেরা পান চাষ থেকে মুখ ফিরিয়ে নেবে,যা দেশীয় মিষ্টি পান চাষে বড় আকারে হুমকি হয়ে যাবে।
এ বিষয়ে দুর্গাপুর কৃষি কর্মকর্তা সাহানা পারভিন লাবনী বলেন, দুর্গাপুরে প্রায় ১২.৫০ হেক্টর জমিতে পান হয়েছে, পান হলো দীর্ঘমেয়াদি ফসল এইজন্য হয়তো দাম ওঠা নামা হয়।বর্ষা মৌসুমে পানের দামটা একটু কম থাকে, কারণ এই সময় পানের উৎপাদন টা একটু বেশি হয়। তবে মৌসুম পরিবর্তন হয়ে শীতকাল আসলে পানের দাম বাড়ে, তখন হয়তো কৃষক তাদের খরচটা পুষিয়ে নিতে পারবে।
ভিওডি বাংলা/ এমএইচ