• ঢাকা বুধবার, ১৮ ডিসেম্বর ২০২৪, ৩ পৌষ ১৪৩১

চেয়ারম্যান ছাড়া ভারপ্রাপ্ত হওয়ার সুযোগ নেই: শামীম

নিজস্ব প্রতিবেদক    ৮ আগস্ট ২০২৫, ০৫:০২ পি.এম.
ব্যারিস্টার শামীম হায়দার পাটোয়ারী-ছবি সংগৃহীত

চেয়ারম্যান দায়িত্ব না দিলে অন্য কোনো পন্থায় ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান হওয়ার সুযোগ জাতীয় পার্টিতে নেই বলে জানিয়েছেন ব্যারিস্টার শামীম হায়দার পাটোয়ারী।

সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে জাতীয় পার্টির মহাসচিব ব্যারিস্টার শামীম হায়দার পাটোয়ারী বলেছেন, দলের গঠনতন্ত্র অনুযায়ী জাতীয় পার্টিতে চেয়ারম্যানের অনুমতি ছাড়া কেউ ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান হতে পারেন না।

সংবাদ সম্মেলনে তিনি বলেন, গঠনতন্ত্রের ২০(২)(খ) ধারায় বলা হয়েছে, দীর্ঘ সময়ের অনুপস্থিতে চেয়ারম্যানই সিনিয়র কো-চেয়ারম্যান, কো-চেয়ারম্যান অথবা প্রেসিডিয়ামের কোনো সদস্যকে ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান হিসেবে নিয়োগ দিতে পারেন। বর্তমানে জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান গোলাম মোহাম্মদ কাদের দেশে আছেন, সুস্থ আছেন এবং নিয়মিত অফিসে আসছেন। তিনি কাউকে ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান হিসেবে নিয়োগ দেননি। অতএব, অন্য কোনো উপায়ে ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান হওয়ার প্রচেষ্টা সম্পূর্ণ অবৈধ ও গঠনতন্ত্রবিরোধী।

তিনি আরও বলেন, বহিষ্কৃতদের ডাকা কাউন্সিলে জাতীয় পার্টির মূলধারার কোনো নেতাকর্মী অংশ নেবেন না। শিষ্টাচারের কারণে দীর্ঘদিনের সহকর্মীরা এমন বেআইনি কাউন্সিল থেকে বিরত থাকবেন বলেই তিনি আশা প্রকাশ করেন।

কাউন্সিল স্থগিত, ষড়যন্ত্র ও বহিষ্কার প্রসঙ্গে ব্যারিস্টার শামীম হায়দার পাটোয়ারী জানান, ২৮ জুন জাতীয় কাউন্সিল অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা থাকলেও হল বরাদ্দ না পাওয়ায় তা স্থগিত করা হয়। ২৭ জুন পুনরায় হল চাওয়া হলেও কর্তৃপক্ষ লিখিতভাবে অপারগতা প্রকাশ করে। অথচ, এই বিষয়টি নিয়ে কিছু সিনিয়র নেতা মিথ্যা তথ্য ছড়িয়ে বিভ্রান্তি সৃষ্টি করেছেন।

তিনি বলেন, ২৫ জুন জাতীয় পার্টির ৭৮টি ইউনিটের নেতারা বৈঠক করে চেয়ারম্যানের প্রতি পূর্ণ আস্থা প্রকাশ করেন এবং বিশৃঙ্খলাকারীদের বিরুদ্ধে শাস্তির দাবি জানান। পরবর্তীতে ২৮ জুন প্রেসিডিয়াম সভায় তাদের বহিষ্কারের সিদ্ধান্ত হয় এবং গঠনতন্ত্রের ৩০ ধারা মোতাবেক চেয়ারম্যান কয়েকজনকে বহিষ্কার করেন।

এরপর বহিষ্কৃতরা আদালতে একটি দেওয়ানি মামলা করেন। আদালত চেয়ারম্যান ও দফতর সম্পাদকের সাংগঠনিক কর্মকাণ্ডে অস্থায়ী নিষেধাজ্ঞা দিলেও, চেয়ারম্যানের পদ বা বৈধতা বাতিল করেননি। তাই বহিষ্কৃতরা এখনও বহিষ্কৃত এবং তাদের দ্বারা কোনো সভা বা কাউন্সিল আহ্বান অবৈধ।

মহাসচিব ও দলীয় নেতৃত্ব প্রসঙ্গে মহাসচিব বলেন, ‌‘আদালতের রায়ে কোথাও ‘মহাসচিব’ পদ সংক্রান্ত কোনো নির্দেশনা নেই। তবুও কেউ কেউ নিজেদের মহাসচিব দাবি করছেন, যা বিভ্রান্তিকর এবং আদালতের আদেশের অপব্যাখ্যা।’

তিনি বলেন, জাতীয় পার্টি গঠনতন্ত্র মোতাবেক পরিচালিত হচ্ছে। দলীয় সব সিদ্ধান্ত সভার মাধ্যমে এবং গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ায় নেওয়া হয়। যারা বহিষ্কৃত হয়েছেন, তাদের সভা ও পদ ব্যবহার সম্পূর্ণ অবৈধ।

নির্বাচন পরিস্থিতি ও রাজনৈতিক অবস্থান সম্পর্কে সংবাদ সম্মেলনে ব্যারিস্টার শামীম বলেন, ‘দেশে বর্তমানে নির্বাচনের উপযুক্ত পরিবেশ নেই। সরকারের নিয়ন্ত্রণ দুর্বল এবং নির্বাচন আয়োজনের আন্তরিকতাও অনুপস্থিত।’ তিনি বলেন, আগামী ৬ মাসে নির্বাচন সম্ভব হতে পারে, তবে তার জন্য সরকারের সদিচ্ছা ও সক্ষমতা প্রয়োজন।’

তিনি অভিযোগ করেন, নিবন্ধিত ও অভিজ্ঞ দল হয়েও জাতীয় পার্টিকে নির্বাচন কমিশন কোনো আলোচনা সভায় ডাকছে না, যা নির্বাচন প্রক্রিয়ায় লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড না থাকার বড় প্রমাণ।

তিনি আরও বলেন, ‘২০১৪ সালে জাতীয় পার্টি ২৭০ জন প্রার্থী নিয়ে নির্বাচন বর্জন করেছিল। পল্লীবন্ধু এরশাদ ও জিএম কাদের জীবন বাজি রেখে সে সময় আন্দোলনে অংশ নিয়েছিলেন। ২০১৮ সালের নির্বাচনেও প্রায় সব দল অংশ নিলেও সেটি প্রশ্নবিদ্ধ ছিল।’

বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে জাতীয় পার্টির ভূমিকা  সম্পর্কে তিনি জানান, গত বছরের ২৫ জুলাই জাতীয় পার্টি বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে বর্ধিত সভার মাধ্যমে সর্বাত্মক সমর্থন দেয়। রংপুরে আন্দোলনে অংশ নিতে গিয়ে দলের দুই নেতা শহীদ হন, চারজন কারাবরণ করেন এবং অনেক নেতাকর্মী মামলায় হয়রানির শিকার হন।

তিনি বলেন, জাতীয় পার্টি গণতান্ত্রিক দল, গণতান্ত্রিক চর্চার মাধ্যমেই আমরা সামনের দিনগুলোতে এগিয়ে যেতে চাই।

আইন-শৃঙ্খলা ও নির্বাচনে অংশগ্রহণ প্রসঙ্গে প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘দেশে যদি সুষ্ঠু আইন-শৃঙ্খলা না থাকে, প্রশাসন নিরপেক্ষভাবে কাজ না করে এবং নির্বাচনে সমান সুযোগ না থাকে, তবে নির্বাচনে অংশগ্রহণ হবে “হাত-পা বাঁধা অবস্থায় সাঁতার কাটা”-র মতো।

সরকার নিরপেক্ষভাবে দায়িত্ব পালন করলে তবেই জাতীয় পার্টি নির্বাচনে অংশগ্রহণ করবে বলে তিনি জানান।

সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন-প্রেসিডিয়াম সদস্য সাইফুদ্দিন আহমেদ মিলন, অ্যাডভোকেট মো. রেজাউল ইসলাম ভূঁইয়া, আলমগীর শিকদার লোটন, ইঞ্জিনিয়ার ইকবাল হোসেন তাপস, অধ্যাপক মহসিনুল ইসলাম হাবুল, বীর মুক্তিযোদ্ধা অ্যাডভোকেট মমতাজ উদ্দিন, ইঞ্জিনিয়ার মইনুর রাব্বি চৌধুরী রুম্মন, চেয়ারম্যানের উপদেষ্টা হেনা খান পন্নী, প্রফেসর ড. গোলাম মোস্তফা, মো. খলিলুর রহমান খলিল, ভাইস চেয়ারম্যান আমির উদ্দিন ডালু, মো. হেলাল উদ্দিন, এম এ সোবাহান, আখতার হোসেন দেওয়ান, চেয়ারম্যানের প্রেস সেক্রেটারি খন্দকার দেলোয়ার জালালী  ও যুগ্ম দফতর সম্পাদক সমরেশ মন্ডল মানিক প্রমুখ।

ভিওডি বাংলা/জা

 

  • দেশজুড়ে এর পাঠক প্রিয়
আরও পড়ুন
দেশ রক্ষার নির্বাচনে বিএনপিকে জিততেই হবে- আবদুস সালাম
দেশ রক্ষার নির্বাচনে বিএনপিকে জিততেই হবে- আবদুস সালাম
৫ আগস্টের পর অনেকে লোভে পড়ে গেছে : এ্যানি
৫ আগস্টের পর অনেকে লোভে পড়ে গেছে : এ্যানি
জনপ্রিয়তা বেড়েছে এনসিপির
জনপ্রিয়তা বেড়েছে এনসিপির