চট্টগ্রাম বন্দরের ইজারা চুক্তি বাতিলের দাবিতে স্কপের প্রতীকী অবরোধ

চট্টগ্রাম বন্দরের টার্মিনাল বিদেশিদের ইজারা দেওয়ার প্রতিবাদে বন্দরমুখী সড়কের তিনটি পয়েন্টে প্রতীকী অবরোধ কর্মসূচি পালন করেছে শ্রমিক-কর্মচারী ঐক্য পরিষদ (স্কপ)।
বুধবার (২৬ নভেম্বর) সকাল ১০টা থেকে নগরের মাইলের মাথা, বড়পোল ও বন্দরের টোল প্লাজা গেট এলাকায় প্রতীকী অবরোধ শুরু হয়। এর আগে সকাল থেকেই সেখানে স্কপের নেতা-কর্মীরা উপস্থিত হন। কর্মসূচির শুরুতে সমাবেশ করেন তাঁরা। সেখানে কর্মসূচির সমর্থনে বক্তব্য দেন শ্রমিক নেতারা।
চট্টগ্রাম বন্দরের নিউমুরিং কনটেইনার টার্মিনাল (এনসিটি) বিদেশিদের ইজারা দেওয়ার চুক্তির প্রতিবাদে এবং লালদিয়ার চর ও পানগাঁও টার্মিনালে বিদেশি অপারেটরদের ইজারার চুক্তি বাতিলের দাবিতে এ কর্মসূচি ঘোষণা করে স্কপ। গত শনিবার স্কপের চট্টগ্রাম বিভাগীয় সম্মেলন থেকে এ ঘোষণা দেওয়া হয়।
ঘোষণা অনুযায়ী, নগরের তিন মোড়ে অবরোধের পাশাপাশি চট্টগ্রাম বিভাগের বিভিন্ন জেলায় বিক্ষোভ মিছিল হওয়ার কথা রয়েছে। শ্রমিক নেতারা বলছেন, বন্দরের এনসিটি একটি লাভজনক টার্মিনাল। এটি বিদেশিদের ইজারা দিতে তড়িঘড়ি করছে সরকার। অন্যদিকে লালদিয়া চুক্তির বিষয়বস্তু গোপন রাখা হয়েছে। বন্দর জনগণের সম্পদ। জনগণের আড়াল করে চুক্তির বিষয়টি রাষ্ট্রের স্বার্থবিরোধী।
সরেজমিন দেখা যায়, সকালে বড়পোল মোড়ে অবস্থানরত শ্রমিক নেতা-কর্মীদের হাতে থাকা ব্যানারে লেখা-'চট্টগ্রাম বন্দরের লাভজনক এনসিটি ডিপি ওয়ার্ল্ডকে ইজারা দেওয়ার পাঁয়তারার প্রতিবাদে এবং লালদিয়ার চর ও পানগাঁও ইজারা চুক্তি বাতিলের দাবিতে বন্দর অবরোধ কর্মসূচি'।
সমাবেশে বাংলাদেশ শ্রমিক ফেডারেশনের কেন্দ্রীয় সভাপতি এস কে খোদা তোতন বলেন, ‘আমরা চাইলেই বন্দর অচল করে দিতে পারি। কিন্তু আমরা সময় দিচ্ছি। বিদেশিদের টার্মিনাল দেওয়ার সিদ্ধান্ত থেকে সরে আসুন।’ শ্রম অধিকারকর্মী ফজলুল কবির বলেন, ‘বন্দর কোনোভাবেই বিদেশি হাতে দেওয়া যাবে না।’
এদিকে নিউমুরিং কনটেইনার টার্মিনাল (এনসিটি) পরিচালনায় বিদেশি কোম্পানির সঙ্গে চুক্তি-সম্পর্কিত প্রক্রিয়া নিয়ে করা রিট আবেদনের রায় আগামী ৪ ডিসেম্বর দেবেন হাইকোর্ট। ডিপি ওয়ার্ল্ডের সঙ্গে চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষের এই চুক্তি-সম্পর্কিত প্রক্রিয়া প্রশ্নে রুলের ওপর শুনানি শেষে গতকাল মঙ্গলবার বিচারপতি ফাতেমা নজীব ও বিচারপতি ফাতেমা আনোয়ারের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ রায়ের এ দিন ধার্য করেন।
নিউমুরিং টার্মিনাল নির্মিত হয় ২০০৭ সালে, মোট ২ হাজার ৭১২ কোটি টাকা বিনিয়োগে। চট্টগ্রাম বন্দরের আমদানি-রপ্তানি কনটেইনারের বেশির ভাগ এই টার্মিনাল দিয়ে পরিবহন করা হয়। এটি পরিচালনা করছিল সাইফ পাওয়ারটেক। তাদের সঙ্গে চুক্তির মেয়াদ শেষ হয় গত ৬ জুলাই। এরপর নৌবাহিনীর প্রতিষ্ঠান চিটাগং ড্রাইডক লিমিটেড এটি পরিচালনার দায়িত্ব পায়।
এই টার্মিনাল পরিচালনায় ২০১৯ সালের ১৭ ফেব্রুয়ারি ডিপি ওয়ার্ল্ডের সঙ্গে সরকারি-বেসরকারি অংশীদারত্ব (পিপিপি) কর্তৃপক্ষের সমঝোতা স্মারক হয়েছিল। এখন বিদেশি এই কোম্পানির সঙ্গে চুক্তির প্রক্রিয়া বন্দর কর্তৃপক্ষ এগিয়ে নিতে চাইলে তার বৈধতার প্রশ্নে বাংলাদেশ যুব অর্থনীতিবিদ ফোরামের সভাপতি মির্জা ওয়ালিদ হোসাইন হাইকোর্টে রিট আবেদন করেন।
এদিকে লালদিয়া টার্মিনাল পরিচালনায় ডেনমার্কের এপিএম টার্মিনালস এবং পানগাঁও নৌ টার্মিনাল পরিচালনায় সুইজারল্যান্ডের মেডলগ এসএ সম্প্রতি চুক্তি পেয়েছে।
ভিওডি বাংলা/জা







