রাজশাহীতে শিশু হাসপাতালে বরাদ্দ ৮ কোটি টাকা


রাজশাহী নগরীর টিবিপুকুর এলাকায় পড়ে আছে ২০০ শয্যা বিশিষ্ট নবনির্মিত শিশু হাসপাতালের ভবন। দুই বছর আগে ভবনটির নির্মাণকাজ শেষ হলেও এখন হাসপাতালের কার্যক্রম শুরু হয়নি। এ অবস্থায় অযত্ন-অবহেলায় নষ্ট হতে বসেছে। ভবনে লাগানো এসিগুলো এবং হাসপাতালের জন্য কেনা দামি দামি ফ্রিজগুলোও নষ্টও হতে বসেছে। এরই মধ্যে সম্প্রতি আরও ৮ কোটি টাকা বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে আসবাবপত্র কেনার জন্য। অথচ স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় থেকে জনবলই নিয়োগ করা হয়নি এ হাসপাতালের জন্য।
এদিকে, গত ৫ আগস্টের পর স্থানীয় একটি মাস্তান বাহিনী ভবনটি দখল করারও চেষ্টা করেছিলেন বলে অভিযোগ উঠেছে। তবে ঠিকাদারদের লোকজনের বাধার কারণে সেটি সম্ভব হয়নি। বাধা দেওয়ার সময় ঠিকাদারের পাহাদারকে মারপিটও করা হয়েছিল ওই সময়।
সরেজমিন গিয়ে দেখা গেছে, প্রায় ৩৫ কোটি টাকা ব্যয়ে এ হাসপাতালটির নির্মাণকাজ শেষ হয় গত ২০২৩ সালে। কিন্তু ব্যবহার না হওয়া ভবনের রংও উঠতে শুরু করেছে। লাগানো এসিগুলো দুই বছর ধরে ব্যবহৃত না হওয়ায় নষ্ট হতে বসে। কক্ষের ভিতরে পড়ে আছে বিশালকার দামি দামি ফ্রিজগুলো। যেগুলোতে ওষুধসহ বিভিন্ন জিনিসপত্র রাখার কথা। হাসপাতালটি চালু না হওয়ায় এবং কোনো কতৃৃপক্ষ বুঝে না নেওয়ায় নির্মাণকাজের জন্য নিয়োজিত ঠিকাদারের একজন লোক দিয়ে হাসপাতাল ভবনটি পাহারা দেয়া হচ্ছে।
রাজশাহী গণপূর্ত বিভাগ সূত্র মতে, রাজশাহী মেডিক্যাল কলেজ (রামেক) হাসপাতালের শিশু ওয়ার্ডে অতিরিক্ত শিশু রোগীর চাপ সামলাতে এবং বিশেষায়িত চিকিৎসাসেবা চালু করতেই ২০১৬ সালে হাসপাতালের পাশেই শিশু হাসপাতাল নির্মাণকাজ শুরু হয়। কয়েক দফা সময় বৃদ্ধি করে সেই কাজ শেষ হয় ২০২৩ সালের জুনে। নির্মাণকাজ শেষ হওয়ার পরে ২০০ শয্যার এই শিশু হাসপাতালটি বুঝে দেওয়া হয় গণপূর্ত বিভাবগকে। কিন্তু তারা আর স্বাস্থ্য বিভাগকে বুঝে দিতে পারেনি।
ঠিকাদারের পাহারাদার নজরুল ইসলাম বলেন, ‘আমি ভবনটি নির্মাণকাজ শুরু হওয়ার পর থেকেই পাহারা দিচ্ছি। কেউ কোনো দিন এসে কিছু বলার সাহস পাইনি। কিন্তু ৫ আগস্টের পর কয়েক দফা ভবনটি দখলের চেষ্টা করে স্থানীয় মাস্তান বাহিনী। ভবনটি পড়ে আছে বলেই স্থানীয়রা দখল করার চেষ্টা করছে। চালু হলে তো আর করতে পারবে না। আবার একা পাহারা দেওয়ার কারণেও রাতের আঁধারে সুযোগ পেলেই বিভিন্ন জিনিসপত্র চুৃরি করে নিয়ে যাচ্ছে। আমি একা মানুষ কয়দিকে সামলাবো। এতো বড় ভবন পাহারা দেওয়া তো কষ্ট।
ঠিকাদারের ইঞ্জিনিয়ার ফরহাদ সরকার জানান, ভবনটি চালু না হওয়ার কারণে চোরেরা জানালার অ্যালুমিনিয়াম ফ্রেম খুলে নিয়ে যাচ্ছে। তবে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ ভবন হস্তান্তরের আহ্বানে সাড়া দিচ্ছেন না।
রাজশাহী গণপূর্ত বিভাগ-২-এর নির্বাহী প্রকৌশলী আবু হায়াত মুহাম্মদ শাকিউল আজম বলেন, ‘আমরা সিভিল সার্জন কার্যালয়ে চিঠি দিয়ে হাসপাতালটি বুঝে নেওয়ার জন্য বার বার অনুরোধ করছি। কিন্তু জনবল নিয়োগ না হওয়ায় তারাও বুঝে নিতে পারছে না। এ কারণেই পড়ে আছে ভবনটি। আর পদে থাকার কারণে অনেককিছুই নষ্ট হতে বসেছে। পড়ে থাকলে জিনিসপত্র নষ্ট হয় এটাই স্বাভাবিক।’
ভিওডি বাংলা/ এমএইচ