• ঢাকা বুধবার, ১৮ ডিসেম্বর ২০২৪, ৩ পৌষ ১৪৩১

জুলাই সনদ চূড়ান্তে ভিন্নমত

বিএনপি, জামায়াত ও এনসিপির আপত্তি কোথায়

নিজস্ব প্রতিবেদক    ৯ আগস্ট ২০২৫, ০১:৫২ পি.এম.
ছবি: সংগৃহীত

জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের মেয়াদ শেষের দিকে আসছে, কিন্তু এখনো চূড়ান্ত করা যায়নি রাজনৈতিক সংস্কারের ‘জুলাই সনদ’। সনদটি বাস্তবায়নের পদ্ধতি ও আইনি ভিত্তি নিয়ে বিএনপি, জামায়াত ও এনসিপিসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের মধ্যে গভীর মতপার্থক্য দেখা দিয়েছে। ফলে, এই সনদ চূড়ান্ত না হওয়ায় জাতীয় ঐকমত্যের পথে বড় ধাক্কা পড়েছে।

জাতীয় ঐকমত্য কমিশন জানিয়েছে, তারা আগামী সপ্তাহে আবারও আলোচনা শুরু করবে। প্রথমে বিশেষজ্ঞদের সঙ্গে আলোচনা করবে, এরপর রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে তৃতীয় দফার বৈঠকে বসবে। এ বৈঠকে সনদ ও তার বাস্তবায়নের পদ্ধতি চূড়ান্ত করার চেষ্টা হবে।

আগের সময়গুলোতে কমিশন একাধিকবার রাজনৈতিক দলগুলোর কাছে খসড়া পাঠিয়েছে। সর্বশেষ ২৮ জুলাই সনদের খসড়া পাঠানো হয়। দলগুলো তাদের মতামত জানিয়েছে। কমিশনের সহ-সভাপতি অধ্যাপক আলী রীয়াজ বিবিসিকে জানিয়েছেন, আগামী দুই-এক দিনের মধ্যে সনদের পূর্ণাঙ্গ খসড়া পাঠানো হবে।

জাতীয় ঐকমত্য কমিশন ২০২৪ সালের ১৫ ফেব্রুয়ারি ছয় মাস মেয়াদে কাজ শুরু করে, যার মেয়াদ ১৫ আগস্ট শেষ হওয়ার কথা। মূল লক্ষ্য ছিল জুলাইয়ের মধ্যে সনদ চূড়ান্ত করা, যা সম্ভব হয়নি।

গত বছরের ৮ আগস্টে গঠিত অন্তর্বর্তী সরকার সংস্কার কার্যক্রম শুরু করে। সংবিধান, নির্বাচন ব্যবস্থা, বিচার বিভাগ, দুর্নীতি দমন কমিশনসহ ১১টি কমিশন গঠন করা হয়। এসব কমিশন সংস্কারের জন্য বিভিন্ন সুপারিশ দেয়। জাতীয় ঐকমত্য কমিশন এসব সুপারিশ নিয়ে ৩০টিরও বেশি রাজনৈতিক দলের সঙ্গে ধারাবাহিক আলোচনা চালিয়ে যাচ্ছে।

জুলাই সনদে দলগুলো যেসব সুপারিশ বাস্তবায়নে একমত হবে, সেগুলো অন্তর্ভুক্ত হবে। খসড়ায় উল্লেখ আছে, আগামী নির্বাচনের পরবর্তী দুই বছরের মধ্যে এসব সংস্কার বাস্তবায়নের অঙ্গীকার থাকবে।

বিএনপি এতে আপত্তি না করলেও জামায়াত ও এনসিপি দাবি করছে, এসব সংস্কার নির্বাচনের আগে অন্তর্বর্তী সরকারের অধীনে বাস্তবায়িত হোক এবং সনদ আইনি ভিত্তি পাক। তাদের সন্দেহ, নির্বাচিত সরকারের অধীনে দায়িত্ব গেলে প্রকৃত বাস্তবায়ন হবে কিনা তা অনিশ্চিত।

জামায়াতের কেন্দ্রীয় প্রচার সম্পাদক মতিউর রহমান আকন্দ বলেছেন, ‘যেসব বিষয়ে সবাই একমত, সেগুলো জাতির সামনে ঘোষণা করে নির্বাচনের পূর্বে সনদে স্বাক্ষর করিয়ে আইনি রূপ দেয়া জরুরি।’

এনসিপির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম আহ্বায়ক আরিফুল ইসলাম আদীবেরও বক্তব্য একই। তিনি বলেন, ‘নির্বাচনের আগে সনদ আইনি ও সাংবিধানিক ভিত্তি পেয়ে নির্বাচন হওয়া উচিত।’

বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমদ জানিয়েছেন, স্বাক্ষর নিয়ে দলগুলো একমত, কিন্তু বাস্তবায়ন ও আইনি ভিত্তি স্পষ্ট না হলে স্বাক্ষর ব্যাহত হতে পারে। তিনি বলেন, ‘সাংবিধানিক সংশোধন ছাড়া অন্যান্য সংস্কার এ সরকারের সময়ের মধ্যে অধ্যাদেশ, নির্বাহী আদেশে বাস্তবায়ন সম্ভব।’

জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের মেয়াদ শেষের পথে। কিন্তু দলগুলো এখনও সনদ চূড়ান্ত করার বিষয়ে একমত হতে পারেনি। এই অবস্থায় প্রশ্ন জাগছে যদি দলগুলো এই সময়ের মধ্যে জুলাই সনদ চূড়ান্ত করতে না পারে, তাহলে কী হবে? কি হবে ঐসময়ে যখন সময় শেষের দ্বারপ্রান্তে এসে পৌঁছেছে, কিন্তু রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে গাঁটছড়া বাধতে পারছে না?

ভিওডি বাংলা/ এমএইচ

  • দেশজুড়ে এর পাঠক প্রিয়
আরও পড়ুন
৯৩৫ কোটি টাকায় যুক্তরাষ্ট্র থেকে কেনা হবে দুই জাহাজ
৯৩৫ কোটি টাকায় যুক্তরাষ্ট্র থেকে কেনা হবে দুই জাহাজ
সচিবালয়ে কর্মকর্তা-কর্মচারীদের জন্য ৭ জরুরি নির্দেশনা
সচিবালয়ে কর্মকর্তা-কর্মচারীদের জন্য ৭ জরুরি নির্দেশনা
সংসদ নির্বাচনে ভোটকেন্দ্রের সংখ্যা জানাল ইসি
সংসদ নির্বাচনে ভোটকেন্দ্রের সংখ্যা জানাল ইসি