মৃত ভোটারদের সঙ্গে চা পান করে আলোচনায় রাহুল গান্ধী!


ভারতের ভোটার তালিকা সংক্রান্ত অনিয়ম ও অসঙ্গতি তুলে ধরতে এক ব্যতিক্রমী উদ্যোগ নিলেন কংগ্রেস নেতা রাহুল গান্ধী। সম্প্রতি তিনি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে একটি ভিডিও প্রকাশ করেছেন, যেখানে দেখা যায়-তিনি ‘মৃত’ হিসেবে ভোটার তালিকায় চিহ্নিত ব্যক্তিদের সঙ্গে চা পান করছেন ও কথা বলছেন। ভিডিওটি প্রকাশ করে তিনি এটিকে ‘জীবনের এক অনন্য অভিজ্ঞতা’ হিসেবে উল্লেখ করেছেন।
ঘটনাটি বিহার রাজ্যের। সেখানে প্রকাশিত খসড়া ভোটার তালিকায় প্রায় ৬৫ লাখ মানুষের নাম বাদ পড়েছে। এর মধ্যে ২২ লাখেরও বেশি ভোটারকে ‘মৃত’ বলে চিহ্নিত করা হয়েছে। এই পরিস্থিতিকে সামনে রেখে রাহুল গান্ধী মৃত হিসেবে তালিকাভুক্ত কয়েকজন জীবিত ভোটারের সঙ্গে সরাসরি সাক্ষাৎ করেন এবং তা ভিডিও করে প্রচার করেন।
ভিডিওতে দেখা যায়, চা খেতে খেতে রাহুল গান্ধী ওই ব্যক্তিদের জিজ্ঞাসা করছেন-তারা কেমন আছেন, কীভাবে জীবিত থাকা সত্ত্বেও ‘মৃত’ ঘোষণা করা হয়েছে। উপস্থিত ব্যক্তিরা জানান, এ ধরনের ভুল শুধুই তাদের নয়-এমন অসংখ্য মানুষের নাম তালিকায় ভুলভাবে মৃত হিসেবে অন্তর্ভুক্ত হয়েছে।
এই ভিডিও সামাজিক মাধ্যমে দ্রুত ভাইরাল হয়ে পড়ে এবং দেশজুড়ে ব্যাপক রাজনৈতিক আলোচনার জন্ম দেয়। এর মাধ্যমে ভোটার তালিকার স্বচ্ছতা ও নির্বাচন ব্যবস্থার নিরপেক্ষতা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন রাহুল গান্ধী। তিনি আগে থেকেই এই বিষয়ে সরব ছিলেন এবং বারবার অভিযোগ করে এসেছেন যে, নির্বাচনে কারচুপি রোধে ভোটার তালিকার যথাযথ সংশোধন অত্যন্ত জরুরি।
অন্যদিকে, মহারাষ্ট্রের পুনে শহরের একটি বিশেষ এমএলএ আদালতে রাহুল গান্ধী জানান, সাম্প্রতিক রাজনৈতিক অবস্থার কারণে তিনি প্রাণনাশের হুমকির মুখে আছেন। বিশেষ করে সাভারকর পরিবারের বংশপরিচয় নিয়ে মন্তব্যের পর থেকে হুমকিগুলো বেড়ে গেছে। তিনি মহারাষ্ট্র সরকারকে তার নিরাপত্তার জন্য প্রতিরোধমূলক ব্যবস্থা গ্রহণের অনুরোধ করেছেন।
বর্তমানে ভারতের বিভিন্ন রাজ্যে, বিশেষ করে বিহার ও পশ্চিমবঙ্গে, রাষ্ট্রীয় নির্বাচন কমিশন “স্পেশাল ইনটেন্সিভ রিভিশন (SIR)” নামক ভোটার তালিকা হালনাগাদ কার্যক্রম পরিচালনা করছে। বিহারে ইতোমধ্যে এই প্রক্রিয়া সম্পন্ন হলেও বিরোধী দলগুলো এর স্বচ্ছতা নিয়ে প্রশ্ন তুলছে।
রাহুল গান্ধীর ‘মৃত ভোটারদের সঙ্গে চা পান’ ঘটনা দেশের রাজনীতিতে নতুন মাত্রা যোগ করেছে। নির্বাচন ব্যবস্থা, ভোটার তালিকার নির্ভুলতা এবং গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ার স্বচ্ছতা নিয়ে সাধারণ নাগরিকদের মধ্যেও উদ্বেগ ও সচেতনতা বৃদ্ধি পেয়েছে। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এ ঘটনা নির্বাচন কমিশনের কাজের নিরপেক্ষতা ও দক্ষতার বড় পরীক্ষা হয়ে দাঁড়িয়েছে।
বিরোধী দলগুলোর দাবি, তালিকা সংশোধনে আরও গুরুত্ব দেওয়া দরকার এবং ‘মৃত’ হিসেবে চিহ্নিত প্রতিটি ভোটারকে যাচাই করে যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়া উচিত। অপরদিকে, সরকার দাবি করছে-হালনাগাদ কার্যক্রম সম্পূর্ণ আইনসম্মত ও স্বচ্ছভাবে সম্পন্ন হয়েছে।
ভিওডি বাংলা/জা