তাড়াশে চলছে অবাধে পাখি শিকার


সিরাজগঞ্জের তাড়াশ ও তার আশপাশের এলাকাগুলো পাখির কলকাকলিতে মুখরিত হয়ে উঠছে। এ সুযোগে পেশাদার ও সৌখিন পাখি শিকারিরা পাখি নিধন শুরু করছে। তারা ব্যবহার করছে বিষটোপ, জাল ও বিভিন্ন ধরনের ফাঁদ। স্থানীয়দের অভিযোগ বিভিন্ন সংগঠন পাখি নিধন বন্ধে কাজ করলেও সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের নজরদারির অভাবে পাখি শিকার বন্ধ হচ্ছে না।
সরেজমিনে দেখা যায়, ফসলের জমিতে পানি দেওয়ার সময় মাটির নিচে থেকে উঠে আসা পোকামাকড়সহ বিভিন্ন কীটপতঙ্গ খেতে ব্যস্ত হয়ে পড়ে পাখি। এই পাখিগুলোর মধ্যে রয়েছে সাদা বক, শালিক, চড়ুই, ডাহুক ও চ্যাগা। এ সময় একশ্রেণির পাখি শিকারিরা পতঙ্গের ভেতরে বিষাক্ত কিটনাশক ঢুকিয়ে ছেড়ে দেয়। সেই পোকাগুলো খেয়ে পাখিরা মারা যায়। ঠিক তখনই পাখিগুলো ধরে ব্লেড বা ছুরি দিয়ে জবাই করা হয়।
আবার কোথাও বড় বাঁশের সঙ্গে আকাশের দিকে উঁচু করে বড় ধরনের জাল পেতে রাখা হয় এবং পাখিদেরকে ধাওয়া দেয়া হয়। ধাওয়া খেয়ে পাখিগুলো উড়তে গিয়ে জালে আটকা পড়ে। এই সুযোগে শিকারিরা পাখি ধরে বস্তায় ঢুকিয়ে রাখে। পরবর্তীতে পাখিগুলো বিক্রি করে দেয়।
সেচ্ছাসেবী সংগঠন ভিলেজ ভিশন এর সাধারণ সম্পাদক সাইফুল ইসলাম বলেন, ২০২০ সাল থেকে আমরা চলনবিল এলাকায় পাখি শিকার বন্ধে কাজ করছি। আমরা মূলত পাখি শিকারিদের নিষেধ ও পাখি অবমুক্ত করে থাকি। এতে পাখি শিকারিরা ততোটা ভয় পায় না। কিন্তু প্রশাসন এ বিষয়ে একটু নজর দিলে কেউ আর অবাধে পাখি শিকার করতে পারবে না।
স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন দি বার্ডস সেফটি হাউজের চেয়ারম্যান মামুন বিশ্বাস জানান, চলনবিল অঞ্চলে স্বেচ্ছাসেবী কিছু সংগঠন পাখি রক্ষায় কাজ করছেন। তারা শিকার করা পাখি অবমুক্ত করলেও তৃণমূল পর্যায়ে জনসচেতনতার অভাব ও সরকারি-বেসরকারি সমন্বয়ের অভাবে এ বিলে স্থায়ীভাবে পাখি শিকার বন্ধ করা সম্ভব হচ্ছে না।
পাখি নিধন বিষয়ে তাড়াশ ডিগ্রি কলেজের প্রাণিবিদ্যা বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক বিদ্যুৎ কুমার জানান, বন্যপ্রাণী আইন অনুযায়ী পাখি নিধন দণ্ডনীয় অপরাধ। আর শীত বা বর্ষার মৌসুম শেষে শরৎকালে খাদ্য ও নিরাপত্তার জন্য দেশীয় পাখি চলনবিলে যায়। এসব পাখি পরিবেশের ভারসাম্য রক্ষা, সৌন্দর্য বর্ধন এবং ক্ষতিকারক পোকামাকড় খেয়ে পরিবেশকে রক্ষা করে।
তাড়াশ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা নুসরাত জাহান বলেন, পাখি শিকার একটি অপরাধ। তবে কেউ পাখি শিকার করছে এমন সংবাদ পেলে অবশ্যই ঘটনাস্থলে গিয়ে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে ।
ভিওডি বাংলা/ এমএইচ