• ঢাকা বুধবার, ১৮ ডিসেম্বর ২০২৪, ৩ পৌষ ১৪৩১

দেশে গণতন্ত্র না থাকলে বিদেশী বিনিয়োগ আসবে না

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক    ১১ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ০৭:৩৫ পি.এম.
ছবি: সংগৃহীত

দেশে যদি নির্বাচিত সরকার না থেকে তাহলে জবাবদিহিতা ও গণতন্ত্র থাকে না। আর যদি গণতন্ত্র না থাকে তাহলে বিদেশী বিনিয়োগ আসবে না। বর্তমান সরকার সামষ্টি অর্থনীতিতে স্থিতিশীলতা আনলেও অর্থনীতিতে সংস্কারের চাকা ঘুরেনি বলে মনে করেন ব্যবসায়ী ও অর্থনীতিবিদরা। 

বৃহস্পতিবার (১১ সেপ্টেম্বর) রাজধানীর গুলশানের লেকশোর হোটেলে আয়োজিত 'সংকট থেকে স্থিতিশীলতা: অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির ভিত্তি গণতন্ত্র' শীর্ষক সেমিনারে বক্তারা এসব কথা বলেন।

পলিসি এক্সচেঞ্জ কমিশনের চেয়ারম্যান ও অর্থনীতিবিদ এম মাশরুর রিয়াজ বলেন, রাজস্ব, অর্থনৈতিক ব্যবস্থাপনা শৃঙ্খল ভেঙ্গে পড়েছে। যা ঠিক করতে গেলে তিনটি জিনিস করতে হবে। প্রথমত আত্মবিশ্বাস ফিরিয়ে আনার প্রয়োজন। সরকারের আমল থেকে রাষ্ট্রের আর্থিক শৃঙ্খলা ভেঙ্গে পড়েছে।  বিনিয়োগকারী, গ্লোবাল কমিউনিটি, গ্লোবাল ইকোনমিক পার্টনার, তাদের যে বাংলাদেশ সরকারের সঙ্গে তারা ডিল করবে; যেই পলিসির আন্ডারে তারা কাজ করবে সেটার প্রেডিক্টিবিলিটি, কনসেন্টেন্সি সব কিছুর উপর কনফিডেন্স নির্ভর করবে। এই কনফিডেন্স সাধারণত নির্বাচিত সরকারের আমলে যেভাবে হয়, অনির্বাচিত বা ইন্টেরিয়ামের আমলে সেইভাবে হয় না। যোগ করেন তিনি।

তিনি বলেন, অন্তর্বর্তী সরকার কিছু ভাল কাজ করেছে। ম্যাক্রো তে কিছু স্থীতিশীলতা তৈরি, সেন্ট্রাল ব্যাংককে তার স্বাধীনতা ফেরত দিয়েছে। সংস্কারের ইচ্ছা ব্যক্ত করেছে। আমরা দেশী ও বিদেশী বিনিয়োগকারীদের কাছ থেকে যেটা শুনেছি তাদের কনসার্ন এবং আমরা দেখছি সরকারের পক্ষ থেকে আউটরিচটা খুব কম। সরকার তাদের এনগেইজ করছে কম। এর ফলে আত্মবিশ্বাস আবার আঘাত প্রাপ্ত বা ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। বাণিজ্য-বাণিজ্য ও বিনিয়োগের জন্য সংস্কার, পুরো অর্থনৈতিক ব্যবস্থাপনা সংস্কার বহুবছর ধরে বকেয়া হয়ে আছে। কিন্তু আগে তো হয়নি গত ১ বছরে সেই রিফর্মের চাকা আসলে ঘুরেনি।  এটা জনগণের ম্যান্ডেট প্রাপ্ত সরকার আসার আগে সেই সংস্কারের যেই শক্তিটা প্রয়োজন হয়, আত্নবিশ্বাস প্রয়োজন হয় সেটা পাওয়া যাবেনা। সুতরাং সেই দিক থেকেও আমাদের  যে ডেমোক্রেটিক ট্রানজিশন; ইলেকশনের মাধ্যমে সেটা খুব তরান্বিত হওয়া প্রয়োজন।

এই অর্থনীতিবিদের মতে, জনগণের ম্যান্ডেট সহ নির্বাচিত সরকার সেই গণতন্ত্র, এর সঙ্গে অর্থনৈতিক উন্নয়নের ওতপ্রোত সম্পর্ক আছে। আটলান্টিক কাউন্সিল, হেরিটেজ ফাউন্ডেশন সব গুলোর প্রতিবেদন দেখাচ্ছে যে গণতান্ত্রিক পরিবেশের সঙ্গে একটা দেশের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি জড়িত। এর যদি কমতে থাকে; সমৃদ্ধি ও মত প্রকাশের স্বাধীনতার ইনডেক্স যদি দেখে গত ৫ বছরের টা দেখেন, আর এই বছরের টা দেখন দেখবেন এর পরিবর্তন হয়েছে । এই পরিবর্তন কে সুসংহত করতে গেলে আমাদের গণতন্ত্র কে শক্তিশালী করতে হবে, সেখানে নির্বাচিত সরকার ও নির্বাচন গুরুত্বপূর্ণ।

বিজিএমইএ'র সভাপতি মাহমুদ আহসান খান বাবু বলেন, গত পনেরো বছরে আমরা দেখেছি, গণতন্ত্র না থাকলে জবাবদিহিতা থাকে না। জবাবদিহিতা না থাকলে বিনিয়োগ হবে না। লুটপাট হবে এবং লুটপাটের সংস্কৃতি চালু হবে। সুতরাং দেশের মানুষের স্বার্থে এবং সত্যিকারের যদি জবাবদিহিতামূলক সরকার আমরা চাই, তাহলে অবশ্যই গণতন্ত্র লাগবে। গণতন্ত্র না থাকলে যে সমস্যাগুলো হয় সেটা আমরা গত ১৫ বছরে দেখেছি। বিজিএমইএ থেকে আমরাও চাই না যে বাংলাদেশ শুধুমাত্র একটি মাত্র পণ্যের ঊপর নির্ভশীল থাকুক। পণ্যের বৈচিত্রকরণ যেমন লাগবে, সাথে সাথে বাজার বৈচিত্রকরণও লাগবে। সেটা করতে হলে আমি আশা করবো আগামীতে একটা ভালো নির্বাচন হবে। সেই নির্বাচনে যদি জনগণ বিএনপিকে কে ভোট দেয়, আশাকরি তারা একটি শক্তিশালী নীতি করবে. যেটা ইউরোপীয় ইউনিয়ন থেকে আসা উনি বলেছেন। কেউ ইনভেস্ট করতে আসার পর নীতিতে যদি ভিন্ন চিত্র পাওয়া যায় তাহলে ফরেন ইনভেস্টমেন্ট আসবে না। আশা করি ভবিষ্যতে যারা দেশ পরিচালনায় আসবেন এই বিষয়গুলা অনুসরণ করবেন। এটা যদি অনুসরণ করা হয় অবশ্যই দেশে বিনিয়োগ আসবে।

বিএনপির আন্তর্জাতিক বিষয়ক উপ কমিটির সদস্য ইসরাফিল খসরু মাহমুদ চৌধুরী বলেন, আমরা ঋণ নিয়েছি এবং টাকা ছাপিয়েছি। আমাদের ঋন ভিত্তিক অর্থনীতি থেকে বেরিয়ে আসতে হবে। দেশে ব্যবসায়ীরা অনেক নিয়ন্ত্রণের মধ্যে রয়েছে। অনেক বেশি নিয়ন্ত্রিত ব্যবস্থায় অর্থনীতি ঠিকঠাক কাজ করে না। নির্বাচিত হলে বিএনপির সবচে বড় কাজ হবে কর্মসংস্থান সৃষ্টি করা।

অনুষ্ঠানে বিএনপি নির্বাহী কমিটির সদস্য তাবিথ আউয়ালের সঞ্চালনায় আরও উপস্থিত ছিলেন, অর্থনীতিবিদ ডক্টর রাশেদ তিতুমীর, বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানের উপদেষ্টা ডক্টর মাহদি আমিন, 
আন্তর্জাতিক বিষয়ক সম্পাদক ব্যারিস্টার নাসিরউদ্দিন আহমেদ অসীম, আইন বিষয়ক সম্পাদক ব্যারিস্টার কায়সার কামাল, ভারপ্রাপ্ত সাংগঠনিক সম্পাদক অনিন্দা ইসলাম অমিত, সহ সাংগঠনিক সম্পাদক ব্যারিস্টার মীর মোহাম্মদ হেলাল উদ্দিন, স্পেশাল এসিস্ট্যান্ট টু দ্যা চেয়ারপার্সনস ফরেইন অ্যাফেয়ার্স এডভাইজরি কমিটি ইঞ্জিনিয়ার ইশরাক হোসেনসহ ঢাকাস্থ দূতাবাসের আমেরিকা, ইউরোপীয় ইউনিয়ন, চীন, বৃটেনসহ ১০ দেশের রাষ্ট্রদূত ও ওয়ার্ল্ড  ব্যাংককের প্রতিনিধি।

ভিওডি বাংলা/ এমপি

  • দেশজুড়ে এর পাঠক প্রিয়
আরও পড়ুন
রাজধানীতে সভা-সমাবেশে নিষেধাজ্ঞা দিল ডিএমপি
রাজধানীতে সভা-সমাবেশে নিষেধাজ্ঞা দিল ডিএমপি
আগামী নির্বাচনে প্রবাসীরা পোস্টাল ব্যালটে ভোট দিতে পারবে
আগামী নির্বাচনে প্রবাসীরা পোস্টাল ব্যালটে ভোট দিতে পারবে
বাংলাদেশে আসছে ইউরোপীয় পার্লামেন্টের প্রতিনিধিদল
বাংলাদেশে আসছে ইউরোপীয় পার্লামেন্টের প্রতিনিধিদল