• ঢাকা বুধবার, ১৮ ডিসেম্বর ২০২৪, ৩ পৌষ ১৪৩১
টপ নিউজ
ছনুয়া ইউনিয়নে নিজ উদ্যোগে রাস্তাঘাট মেরামত কিশোরগঞ্জে দূর্গামন্ডপ পরিদর্শন করলেন সাবেক এমপি বিলকিস ইসলাম পুলপাড় রায়ের বাজার মন্দির পরিদর্শনে বীর মুক্তিযোদ্ধা আবদুস সালাম মালদ্বীপে রফিকুল আলম মজনুকে সংবর্ধনা শারদীয় দুর্গাপূঁজা উপলক্ষে ঢাকেশ্বরী মন্দির পূঁজা মন্ডপ পরিদর্শনে বিএনপি চীফ প্রসিকিউটর বনাম শেখ হাসিনার মামলার ৫৪তম সাক্ষ্যগ্রহণ আজ মেধা কাজে লাগালে বিশ্বে স্বনামধন্য হওয়া যায় - আবদুস সালাম হোয়াটসঅ্যাপের নতুন চমক ‘শিডিউল কল’ ঢাকেশ্বরী জাতীয় মন্দিরের পূজা প্রস্তুতি পরিদর্শন করেছেন প্রধান উপদেষ্টা প্রতিভাবান খেলোয়াড়দের দায়িত্ব রাষ্ট্র নেবে: আমিনুল হক

চলতি মাসেই কর্মসূচি নিয়ে মাঠে নামছে বিএনপি

   ৫ এপ্রিল ২০২৫, ১২:৩৮ পি.এম.

নিজস্ব প্রতিবেদক 

আগামী সংসদ নির্বাচনের দাবিতে রাজপথে নামছে বিএনপিসহ সমমনা রাজনৈতিক দলগুলো। এ মাস থেকে শুরু হবে তাদের নানা কর্মসূচি। ধীরে ধীরে এ কর্মসূচির মধ্য দিয়ে সরকারের ওপর চাপ সৃষ্টি করতে চাইছে তারা। এর আগে সরকারের কাছে নিজেদের অবস্থান তুলে ধরতে আগামী সপ্তাহে আবারও প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে দেখা করবেন বিএনপি নেতারা। সেখানে নির্বাচনের জন্য প্রয়োজনীয় সংস্কার শেষে দ্রুত নির্বাচনের দাবি জানানো হবে।

এ ছাড়া ডিসেম্বরের মধ্যে জাতীয় নির্বাচন আয়োজনে রোডম্যাপ ঘোষণার দাবিও জানানো হবে।

বিএনপি ও সমমনা কয়েকটি দলের নেতারা জানান, নির্বাচন নিয়ে সরকারের একেক সময়ে একেক বক্তব্যে এক ধরনের অনিশ্চয়তা সৃষ্টি হয়েছে। এতে রাজনৈতিক অস্থিরতার পাশাপাশি আরও অনেক নেতিবাচক প্রভাব পড়তে পারে রাষ্ট্রের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ সেক্টরে। দেশ-বিদেশেও খারাপ বার্তা পৌঁছানোর আশঙ্কা তৈরি হতে পারে। আবার অনির্বাচিত সরকার বেশি দিন ক্ষমতায় থাকলে এটি জাতির জন্য আরেকটি নেতিবাচক উদাহরণ সৃষ্টি হবে।

এ জন্য উদার রাজনৈতিক দলগুলোর পাশাপাশি ডান ও বাম দলগুলোকে এক প্ল্যাটফর্মে আনার উদ্যোগ নেওয়া হচ্ছে। এরই মধ্যে অভিন্ন দাবিতে এসব দল সোচ্চার রয়েছে। খুব শিগগির আনুষ্ঠানিক বৈঠকের মাধ্যমে সরকারের ওপর চাপ সৃষ্টির কৌশল নেওয়া হবে। সেখান থেকে নির্বাচনী রোডম্যাপ ঘোষণার দাবি জানানো হবে। একই সঙ্গে একই দাবিতে পৃথক কর্মসূচি নিয়ে মাঠে ভূমিকা রাখবে এসব দল। এতেও কাজ না হলে ধীরে ধীরে কর্মসূচির তীব্রতা বাড়ানোর পরিকল্পনা রয়েছে ওইসব দলের। তবে আপাতত সরকারের ওপর সমর্থন অব্যাহত রাখার সিদ্ধান্ত রয়েছে।

জানতে চাইলে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমেদ জানান, ‘রোডম্যাপ ঘোষণার জন্য এতদিন ধরে তারা সরকারের কাছে যে আহ্বান জানিয়ে আসছেন, ঈদের পর তা আরেকবার আনুষ্ঠানিকভাবে জানাতে চান। প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে সাক্ষাৎ করে আনুষ্ঠানিকভাবে হয়তো আহ্বান জানাব। তিনি কী পদক্ষেপ নেন এবং কী ঘোষণা দেন, তার জন্য কিছু সময় অপেক্ষা করব আমরা। এর পরও প্রত্যাশিত ঘোষণা না এলে অন্যান্য রাজনৈতিক দলের সঙ্গে আলাপ-আলোচনার মাধ্যমে নিজেদের বক্তব্য তুলে ধরব।’

তিনি আরও বলেন, প্রধান উপদেষ্টা যদি একেক সময় একেক কথা বলেন, ‘দেখতে হবে কেন এভাবে বলছেন? আমরা আগে তাঁর সঙ্গে কথা বলে নেব। তার পরিপ্রেক্ষিতে তিনি কী করেন, তা দেখব। তার পর আমাদের রাজনৈতিক বক্তব্য মাঠে-ময়দানে, জনগণের কাছে কর্মসূচির মধ্য দিয়ে তুলে ধরব।’

এদিকে আগামী নির্বাচন কবে অনুষ্ঠিত হবে, তা নিয়ে রাজনৈতিক অঙ্গনে ধোঁয়াশা রয়েছে। বিভিন্ন দলের মধ্যে নির্বাচনের ইস্যুতে ঐকমত্যের অভাবও দেখা যাচ্ছে। 

মহান স্বাধীনতা দিবস ও পবিত্র ঈদুল ফিতর উপলক্ষে জাতির উদ্দেশে দেওয়া ভাষণে প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস বলেছেন, এ বছর ডিসেম্বর থেকে আগামী বছরের জুনের মধ্যে নির্বাচন হবে।

এ প্রসঙ্গে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, ‘প্রধান উপদেষ্টার বক্তব্য অস্পষ্ট। ডিসেম্বর থেকে জুন পর্যন্ত ছয় মাস। এখনও কোনো রোডম্যাপ প্রকাশিত হয়নি। আমরা স্পষ্ট রোডম্যাপ এবং দ্রুত নির্বাচনের দাবি জানিয়ে আসছি।’

জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম মন্তব্য করেন, সংস্কার ও বিচার ছাড়া নির্বাচন হলে সেটি মেনে নেওয়া হবে না। এ পরিস্থিতিতে রাজনৈতিক মহলে নতুন একটি দাবির কথা উঠে এসেছে, যেখানে ইউনূস সরকারকে অন্তত ২০২৯ সাল পর্যন্ত ক্ষমতায় রাখার প্রস্তাব করা হয়েছে। সম্প্রতি ফেসবুকে এনসিপির মুখ্য সংগঠক সারজিস আলম (উত্তরাঞ্চল) এ দাবি করেন। 

বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, সরকারের ঘনিষ্ঠ কিছু বুদ্ধিজীবীর পরামর্শে এ দাবি উঠে আসতে পারে, যা বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকারকে জাতীয় সরকারে রূপান্তরিত করার প্রচেষ্টা হতে পারে। এ পরিস্থিতিতে রাজনৈতিক দলগুলোর নেতারা মনে করছেন, এ সরকারের মেয়াদ বাড়ানো দেশের জন্য বিপজ্জনক হতে পারে।

তাদের মতে, এ সরকার বিপুল জনসমর্থন নিয়ে ক্ষমতাসীন হয়েছে। শুরুতেই জামায়াত ও ইসলামপন্থিদের প্রতি সরকারের অতিরিক্ত সখ্যের কারণে উদারপন্থিরা সরকারের কাছ থেকে নিজেদের সরিয়ে নিয়েছে। নানা রকমের বিভাজনের কারণে ছাত্রদের জনপ্রিয়তাও দিন দিন কমতে শুরু করেছে। নারীর প্রতি সহিংসতাসহ নানা ঘটনা সমাজে গভীর ভীতি তৈরি করেছে। সারাদেশে মাজার ভাঙচুর, মেয়েদের ফুটবল টুর্নামেন্ট, গানের অনুষ্ঠান বন্ধ করা, শিল্পীদের হুমকি-ধমকিতে এমন একটি পরিস্থিতি তৈরি করেছে, যাতে মনে হয় দেশে ইসলামপন্থি উগ্রবাদের ব্যাপক উত্থান ঘটেছে।

বিশেষ করে যত্রতত্র মব তৈরি করার মধ্য দিয়ে যেভাবে সন্ত্রাস সৃষ্টি করা হয়েছে, তাতে বহু মানুষ উদ্বিগ্ন। দেশি-বিদেশি বিনিয়োগকারীদের একটি বড় অংশ নির্বাচনের মধ্য দিয়ে স্থিতিশীল সরকার চায়। সেনাবাহিনীও ডিসেম্বরের মধ্যে নির্বাচন চায় বলে বারবার জানিয়েছে। ফলে অন্তর্বর্তী সরকারের কাছে নির্বাচন আয়োজন প্রাধান্য পাওয়া উচিত। তাছাড়া নির্বাচনের মধ্য দিয়ে সরকার গঠন করলে সেই সরকার সব দিক থেকে জাতীয় সরকার হবে বলে বিএনপি বারবার বলে এসেছে। সেই সরকারেও ড. ইউনূসের দক্ষতা কাজে লাগানোর সুযোগ থাকবে। 

সরকারের মেয়াদ বাড়ানোর বিষয়ে সতর্ক করতে বিএনপির নেতারা আগে থেকেই বিভিন্ন বক্তব্য তুলে ধরেছেন। ঈদের আগের দিন বিএনপি চেয়ারপারসনের গুলশান কার্যালয়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে মির্জা ফখরুল বলেছেন, নির্বাচনের আগে সরকার নিরপেক্ষতা হারালে বিএনপি তা কোনোভাবেই মেনে নেবে না। তারা সরকারের পূর্ণ নিরপেক্ষতা প্রত্যাশা করে, বিশেষ করে অধ্যাপক ইউনূসের কাছ থেকে। যদি প্রধান উপদেষ্টা এ বিষয়ে দ্রুত কার্যকর পদক্ষেপ না নেন, তাহলে জনগণের মধ্যে এমন ধারণা তৈরি হবে যে, এ সরকার নিরপেক্ষতা বজায় রাখতে ব্যর্থ হয়েছে।

চট্টগ্রামে দলের নেতাকর্মীর সঙ্গে ঈদের কুশল বিনিময়ের সময় বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী বলেন, একটি শক্তি ক্ষমতায় থাকার জন্য নতুন নতুন পন্থা বের করছে। ফ্যাসিস্টরা দাঁড়াতে পারেনি। এ শক্তিও যাতে দাঁড়াতে না পারে, সে জন্য বাংলাদেশের মানুষ প্রস্তুত রয়েছে।

বিএনপির স্থায়ী কমিটির আরেক সদস্য ড. আব্দুল মঈন খান রয়টার্সের সঙ্গে এক সাক্ষাৎকারে আগামী ডিসেম্বরের মধ্যে জাতীয় নির্বাচন না হলে জনগণের মধ্যে জোরালো অসন্তোষ এবং দেশে অস্থিরতা তৈরি হবে বলে সতর্ক করেছেন।

নাগরিক ঐক্যের সভাপতি মাহমুদুর রহমান মান্না বলেন, ‘এই সরকারের ব্যর্থতা আমরা চাই না। সরকার যাতে বোঝে, সেটা চাইছি। দেশের মানুষের মনের আকুতি অনুযায়ী জাতীয় ঐক্য নিয়ে সরকার যেন কাজ করে এবং দ্রুত নির্বাচন দিয়ে সম্মানের সঙ্গে তাদের বিদায় নেওয়ার আহ্বান জানাই।’

বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক সাইফুল হক বলেন, মানুষ এ সরকারকে দুর্বল ও অকার্যকর মনে করায় নৈরাজ্যের বিস্তার ঘটছে। গণঅভ্যুত্থানের আট মাসেও মানুষের জীবনে স্বস্তি আসেনি। এ অবস্থা চলতে দিলে জনগণের জানমাল আরও নিরাপত্তাহীন হয়ে পড়বে। তাই এ সরকারের সময় বাড়ানোর যেসব কথা বলা হচ্ছে, সেটি না করাই উত্তম। 

বাংলাদেশ এলডিপির চেয়ারম্যান শাহাদাত হোসেন সেলিম বলেন, কিছুদিনের মধ্যে সরকার সুনির্দিষ্টভাবে নির্বাচনের রোডম্যাপ না দিলে অতীতের মতো সমমনা রাজনৈতিক দলগুলোকে নিয়ে যুগপৎভাবে আন্দোলনে নামব।

গণঅধিকার পরিষদের সভাপতি নুরুল হক বলেন, নির্বাচন নিয়ে সরকারের পক্ষ থেকে সুনির্দিষ্ট তারিখ ঘোষণা হলে তা প্রধান উপদেষ্টার জন্য সম্মানজনক বিষয় হতে পারে। নির্বাচনের সময়সীমা স্পষ্ট করা না হলে রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে সরকারের দূরত্ব তৈরি হতে পারে, যা কারও জন্যই মঙ্গলজনক হবে না।

ভিওডি বাংলা/এম 

  • দেশজুড়ে এর পাঠক প্রিয়
আরও পড়ুন
দুই দশকে প্রথমবারের মতো গণমাধ্যমে তারেক রহমানের সাক্ষাৎকার
দুই দশকে প্রথমবারের মতো গণমাধ্যমে তারেক রহমানের সাক্ষাৎকার
জাতীয় নির্বাচনের দিনে আলাদা ব্যালটে গণভোটের পক্ষে বিএনপি
জাতীয় নির্বাচনের দিনে আলাদা ব্যালটে গণভোটের পক্ষে বিএনপি
হুমায়ুন কবির সিলেট থেকে নির্বাচন করবেন: মির্জা ফখরুল
হুমায়ুন কবির সিলেট থেকে নির্বাচন করবেন: মির্জা ফখরুল