ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় মেডিকেল টেকনোলজিস্ট ও ফার্মাসিস্টদের কর্মবিরতি

মেডিকেল টেকনোলজিস্ট ও ফার্মাসিস্টদের দীর্ঘদিনের দাবি ১০ম গ্রেড বাস্তবায়নের দাবিতে ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় অর্ধদিবস কর্মবিরতি পালন করা হয়েছে।
বুধবার ৩ ডিসেম্বর সকালে ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর হাসপাতালে সামনে দুপুর ১২টা পর্যন্ত জেলার বিভিন্ন সরকারি ও বেসরকারি হাসপাতালে সকল কার্যক্রম বন্ধ রেখে এই কর্মসূচি পালন করেন সংশ্লিষ্ট পেশাজীবীরা।
কর্মসূচির কারণে হাসপাতালে নমুনা পরীক্ষা, ওষুধ সরবরাহ, ল্যাব পরিষেবা, এক্স-রে ও অন্যান্য ডায়াগনস্টিক কার্যক্রম কয়েক ঘণ্টা বন্ধ থাকে। তবে জরুরি সেবা সচল রাখা হয় বলে জানিয়েছেন অংশগ্রহণকারীরা।
মানববন্ধন ও কর্মবিরতির সময় সংগঠনের নেতারা বলেন, দেশের স্বাস্থ্যব্যবস্থার অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ অংশ হিসেবে সবচেয়ে বেশি ঝুঁকির মধ্যে কাজ করেন মেডিকেল টেকনোলজিস্ট ও ফার্মাসিস্টরা। হাসপাতালে রোগ নির্ণয় থেকে শুরু করে ওষুধ ব্যবস্থাপনা পর্যন্ত সকল পর্যায়ে তারা গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছেন। কিন্তু দীর্ঘদিন ধরে তারা বেতন বৈষম্যের শিকার। স্বাস্থ্যখাতে সমমানের অন্যান্য পেশাজীবীরা উচ্চ গ্রেড পেলেও টেকনোলজিস্ট ও ফার্মাসিস্টদের দাবি উপেক্ষিত থেকে গেছে।
বক্তারা আরও বলেন, দীর্ঘ আন্দোলন, আবেদন ও আলোচনার পরও দাবি বাস্তবায়ন না হওয়ায় তারা বাধ্য হয়ে কর্মসূচি পালন করছেন। তারা দ্রুত ১০ম গ্রেড বাস্তবায়নের জন্য সরকারের প্রতি জোর দাবি জানান। তাদের ভাষায়— “আমরা সরকারকে চাপ দিতে চাই না, কিন্তু ন্যায্য দাবি আদায়ে আন্দোলন ছাড়া কোনো পথ খোলা নেই।”
এ সময় উপস্থিত ছিলেন জহিরুল হক ভূঁইয়া, সভাপতি, বিএমটিএ ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা শাখা; মোহাম্মদ নুরুল আলম, সাধারণ সম্পাদক; এবং জেলার সকল সরকারি ও বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে কর্মরত মেডিকেল টেকনোলজিস্ট ও ফার্মাসিস্টরা।
নেতৃবৃন্দ ঘোষণা দেন, আগামীকাল বৃহস্পতিবার সকাল ৮টা থেকে দিনব্যাপী পূর্ণদিবস কর্মসূচি পালন করা হবে। দাবি পূরণ না হওয়া পর্যন্ত আন্দোলন চলবে বলেও জানান তারা।
ব্রাহ্মণবাড়িয়ার বিভিন্ন হাসপাতালের টেকনোলজিস্ট ও ফার্মাসিস্টরা জানান, তাদের কোনো ব্যক্তিগত স্বার্থ নেই। রোগীদের উন্নত, বৈজ্ঞানিক এবং নিরাপদ সেবা নিশ্চিত করতে হলে এই পেশায় দক্ষ জনবল ধরে রাখা জরুরি। কিন্তু বর্তমানে নিম্ন গ্রেডের কারণে অনেকেই পেশা বদলে ফেলতে বাধ্য হচ্ছেন, যা স্বাস্থ্যখাতে নেতিবাচক প্রভাব ফেলছে।
স্বাস্থ্যসেবার সঙ্গে সম্পৃক্তদের মতে, মেডিকেল টেকনোলজিস্ট ও ফার্মাসিস্টদের দাবি যৌক্তিক। রোগ নির্ণয়ের সঠিকতা এবং ওষুধ ব্যবস্থাপনার মান নিশ্চিত করতে তাদের ভূমিকা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। তাই দ্রুত তাদের দাবি বাস্তবায়ন করা প্রয়োজন।
আন্দোলনকারীরা বলেন, সরকারের সদিচ্ছা থাকলে অতি দ্রুত এই সমস্যার সমাধান করা সম্ভব। তারা আশাবাদ ব্যক্ত করে বলেন, ন্যায্য দাবি রক্ষায় সরকার ইতিবাচক উদ্যোগ নেবে এবং স্বাস্থ্যখাতের উন্নয়নকে আরও একধাপ এগিয়ে নেবে।
ভিওডি বাংলা/ এমএইচ







